Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ আগস্ট ২০২২ ১৯:৫৯

ঢাকা: বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেছেন, বাংলাদেশের ক্রমাগত সাফল্য ও সমৃদ্ধির চাবিকাঠি হলো গুণগত প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা। যে প্রতিষ্ঠানের ওপর সে দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা রয়েছে। আর একটি দেশে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে সেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে পারে। তাই যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের ক্রমাগত সমৃদ্ধি বজায় রাখায় জন্য একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায়।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের এক রেস্টুরেন্টে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটিতে মূল অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রেডরিক-এবার্ট-স্টিফটুং, বাংলাদেশ (এফইএস, বাংলাদেশ)- এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সাধন কুমার দাস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিন পর্বের এ অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে ছিল ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বক্তৃতা, দ্বিতীয় অংশে হাইকমিশনারের সঙ্গে একটি আলোচনা পর্ব- যেখানে অর্থনীতি, বাণিজ্য, রাজনীতি, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। যেখানে আমন্ত্রিত সাংবাদিকরা সরাসরি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সিজিএস- এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ ৫০ বছরের পারস্পরিক সু-সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বড় একটি বাংলাদেশি সম্প্রদায় রয়েছে যারা ব্রিটিশ রাজনীতিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সফলতার পরিচয় দিয়েছে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রফদানির দেশ। ভবিষ্যতে এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক সাহায্য-সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় থাকবে।’

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন তার বক্তব্যে বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিরক্ষা নীতি, সমুদ্র নীতি, রোহিঙ্গা সমস্যা, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় তিনি বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তোরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন প্রকাশ করেছেন। এলডিসি থেকে উত্তোরণের পর ডিসিটিএস-এর আওতায় বাংলাদেশকে বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে আগামী মাসে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী যেই হোক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আগের মতোই শক্তিশালী থাকবে।’

বাংলাদেশে চলমান বিনিয়োগ অব্যাহত থাকার পাশাপাশি আরও বিনিয়োগ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। রাখার পাশাপাশি নতুন আরও বিনিয়োগ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট প্রসঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ‘যুক্তরাজ্য নিরলসভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কাজ করছে এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, আর্থিক সহায়তা, শিক্ষার সু্যোগ প্রদানসহ নানা বিষয়ে তারা কাজ করছে। এছাড়াও জাতিসংঘের নিরাপত্তা বিভাগে এটি নিয়ে তারা আলোচনা করছেন। আফগানিস্তান, ইয়েমেন, এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী শরণার্থী সমস্যা প্রকট হওয়ার কারণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অর্থায়নে কিছুটা সীমাবদ্ধতা তৈরি হলেও তারা এটি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট বাংলাদশের আরএমজি সেক্টরে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, সিজিএস- এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান- এর এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প রফতানিতে নেতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলেনি। এলডিসি থেকে টেকসই উত্তরণের জন্য যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেন যে, ‘বাংলদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রথমবারের মতো যে বিনিয়োগ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।’

ব্রিটিশ হাইকমিশনার তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সঠিক প্রয়োগ, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য থেকে বড় একটি ক্লাইমেট ফান্ড পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার এক্ষেত্রে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ, গ্রিন এনার্জি, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন প্রসঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ করাটা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি সব নাগরিকের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, সঠিকভাবে ভোট গণনা এবং নির্বাচনের ফলাফল সবার দ্বারা সমর্থিত হওয়ার বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

কেবলমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর জোর না দিয়ে তিনি মানব উন্নয়নের ওপর কাজ করতে বলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে চ্যাটারটন বলেন, ‘ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে যুক্তরাজ্য সহায়তা অব্যাহত রাখবে।’

সারাবাংলা/আরএফ/একে

নির্বাচন বাংলাদেশ বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন সুষ্ঠু নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর