সাগর মোহনার ‘মরণফাঁদে’ এক বছরে ডুবেছে ৩০ ট্রলার
২৩ আগস্ট ২০২২ ১২:৪৭
কক্সবাজার: শহরের বাঁকখালী নদীর নাজিরারটেক সাগর মোহনায় অন্তত তিনটি ডুবোচর জেগেছে বলে জানিয়েছেন জেলে ও স্থানীয়রা। বৈরি আবহাওয়ায় সাগর থেকে ফেরার পথে গত শুক্রবার এখানে ডুবে যায় ‘এফবি মায়ের দোয়া’ নামের মাছ ধরার ট্রলার। ওই ঘটনায় ট্রলারে থাকা ১১ জন জীবিত ফিরলেও প্রাণ গেছে সাত জনের। নিখোঁজ আরেকজনের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
জেলে ও সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। ডুবোচরের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় ট্রলার। যার ফলে ফেরার পথে সবসময় উদ্বেগে থাকতে হয়। ডুবোচরের ভয়ে ঘুরে আসতে হয় বহুদূরের সমুদ্রপথ।
কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, ‘নাজিরারটেকে অনেক ডুবোচর রয়েছে। ডুবোচরের কারণে দুর্যোগের সময় অনেক ট্রলার এখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়। প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এখানে আগে একটি বয়া দেখা যেত সেই বয়াটিও এখন আর নেই। এই ডুবোচরগুলো ড্রেজিং করা প্রয়োজন এবং বয়া দেওয়া প্রয়োজন।’
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বাঁকখালী নদীর মোহনা থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত অংশে বিভিন্ন জায়গায় ডুবোচর জেগেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বিভিন্ন ট্রলার যখন তাড়াহুড়ো ফিরতে থাকে তখন অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
গত শুক্রবারও নাজিররাটেক এলাকায় যে ট্রলারটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে তাতে প্রাণ গেছে ৭ জনের। গত এক বছরে এসব ডুবোচরে অন্তত ২০টি ট্রলার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। জেলেদের সাগর যাত্রা ও ফেরা নিরাপদ করতে দ্রুত ড্রেজিং করার দরকার বলে মনে করছেন, এই ব্যবসায়ী।
কক্সবাজারেরর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিন-আল পারভেজ বলেন, ‘বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেবে। সেই ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেটুকু সহযোগিতা করা দরকার সেটি আমরা করবো।’
তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মো. মিজানুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে ছিলে ওই জায়গায় ড্রেজিং করার। আমরা গতবারও সেখানে গিয়েছিলাম। সমুদ্রের মধ্যে থেকে যে ধরনের ড্রেজার কাজ করতে পারে ওই ধরনের ড্রেজার আমাদের নেই। এটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও