সেপ্টেম্বর থেকে রাজপথে মোকাবিলা: ১৪ দল
২৪ আগস্ট ২০২২ ১৬:২৮
ঢাকা: ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সেপ্টেম্বর থেকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, আপনারা প্রস্তুত, আমরাও প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ জয় আমাদের সুনিশ্চিত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্যের জয় হবে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে সভায় ১৪ দলের নেতাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কামরুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, জেপির শেখ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারাসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের নামে আমরাও কিন্তু নির্বাচনের বিরোধিতা করেছি। এই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনের সৃষ্টিকর্তাই হচ্ছে। শেখ হাসিনা। এ দেশে সঠিক ভোট ব্যবস্থা প্রবর্তনের মালিক হচ্ছে শেখ হাসিনা। আজকে যে ভোট ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে। এগুলো তো তার প্রস্তুাবে হয়েছিল। সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন খালেদা জিয়াও। সেদিন তিন জোটের রূপরেখা পরিষ্কারভাবে ছিল তিনটি টার্মের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে। কিন্তু খালেদা জিয়া সরকারে আসার পর তারা সেটি অন্তর্ভুক্ত করেনি।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনের দাবিতে তৎকালীন সময়ে খালেদা জিয়ার সেই বক্তব্য ‘এই দেশে নিরপক্ষ বলতে কিছু নাই পাগল আর শিশু ছাড়া’ উল্লেখ করেন বর্ষীয়ান নেতা আমু বলেন, ‘আজকে তারা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে তাহলে তাদের কাছ থেকে কেন জানতে চাইব না? দেশে শিশু আর পাগলের তালিকাটা কি? যাদের নিয়ে আপনারা তত্ত্বাবধায় সরকার করতে চান?’
ভোট ব্যবস্থা কেমনে নিতে হয়? কেমনে আদায় করতে হয়, কেমনে সুষ্ঠ ভোট করতে হয়, শেখ হাসিনা তা দেখিয়েছেন ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন করে বলেও মনে করেন আমির হোসেন আমু।
নির্বাচন বানচালের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের সমালোচনা করে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘জনগণ আপনাদের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি বলে জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাদেরকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদেরকে হত্যা করছিলেন। নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন। দেশে বিদেশে ধরনা দিয়েছিলেন। জাতিসংঘে ধরনা দিয়েছিলেন। তারা এসেছিল আলোচনা করেছিল। কিন্তু তারপরও অবাধ এবং সুষ্ঠ নির্বাচন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন হয়েছে।’
এ বিষয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজকেও বলতে চাই, যত ষড়যন্ত্রই করেন, যত জায়গায় ধর্ণা দেন না, যে যে কথাই বলুক না কেন; বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। কোনো শক্তি নেই আমরা ব্যতীত, এই নির্বাচনকে ব্যহত করতে পারে। এই নির্বাচন পিছিয়ে দিতে পারে। সেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। এই দেশের সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। জনগণ আপনাদের সঙ্গে নেই। আন্দোলন শুরু করলেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে হবে চিকিৎসার জন্য। এখনও বহাল তবিয়তেই তিনি আসা যাওয়া করছেন, আপনার বললেন মরণাপন্ন। বিদেশে না গেলে মারা যাবে। আন্দোলন করে সফল হলেন না। কখনও বলেন জাতীয় সরকার, কখনও বলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কখনও বলেন নির্বাচনকালীন সরকার।’
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা ১৪ দল। শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রী। মায়া তো আগেই বলে গেছে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে ইনশাআল্লাহ আমরা রাজপথে নামব। বিভিন্ন বিভাগে যাব, বিভিন্ন জেলায় যাব, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় আমরা মিটিং মিছিল করে দেখাব, তাদের সমস্ত মঞ্চ, তাদের সমস্ত লোক একসঙ্গে হওয়ার পরও আমাদের একটা থানায় জনগণের যে সম্পৃক্ততা থাকবে সেই তুলনায় তারা কিছুই না।’
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বর মাস। শোকের মাস শেষ হলে আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করব। যারা এতদিন উল্টাপাল্টা কথা বলেছে। অনেক কথা বলেছে অনেক আপত্তিকর কথা বলছে। মুখবুজে সহ্য করেছি। এটি আগস্ট মাস। শোক ছাড়া ব্যাথা ছাড়া কষ্ট ছাড়া আমাদের কিছু নাই। সেপ্টেম্বরে আমরা কিন্তু তৈরি হয়ে যাচ্ছি। মাঠে দেখা হবে।’
একাত্তরের ঘাতক, পঁচাত্তরের ঘাতক ২০০৪ সালের ঘাতক একই শক্তি দাবি করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে একাত্তরের ঘাতকদের প্রেতাত্মারা রাজনীতি করছেন। সেই অপশক্তি বিএনপি। সেই অপশক্তি জামায়াত। তারা আবার আমাদের সকল অর্জনকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।’
১৪ দলসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রগতিশীল শক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি এভাবে রাজনীতি করতে পারে না।’
সারাবাংলা/এনআর/একে