Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশে যক্ষ্মায় বছরে ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ আগস্ট ২০২২ ২৩:০৮

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনায় বর্তমানে মৃত্যুশূন্য দেশ। বড়জোর দুয়েকজন মারা যায়। কিন্তু প্রতিদিন টিবি কিংবা ক্যানসারে তার থেকেও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ লোক এই রোগে মারা যায়। বাংলাদেশেও ৪০ হাজার মানুষ বছরে যক্ষ্মায় মারা যায়। যা প্রতিদিনের হিসাবে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘কমিউনিটি, রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার অ্যাকশন প্ল্যান ফর টিবি (২০২১-২৩)’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিউবার কুলোসিস বা টিবি পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর প্রধান ১৩তম কারণ। সংক্রামক ব্যাধির মধ্যে মানুষের মৃত্যুর এটি দ্বিতীয় প্রধান কারণ। পৃথিবীতে প্রায় এক কোটি লোক টিবিতে আক্রান্ত।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ লোক এই রোগে মারা যায়। বাংলাদেশেও ৪০ হাজার মানুষ বছরে এর কারণে মারা যায়, যা প্রতিদিনের হিসাবে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি। এছাড়া নতুন করে বছরে আরও তিন লাখ লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনার বিষয়ে আমরা অনেক খোঁজ রাখি। কিন্তু আমরা খোঁজ-ই রাখি না যে টিবিতে প্রতিদিন একশর বেশি মানুষ মারা যায়। অন্য রোগ দেখলে দেখা যায়, ক্যানসারে প্রায় প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। হার্ট অ্যাটাকেও একই রকম। আমাদের এসব বিষয়ে খবর রাখতে হবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘তবে এর মাঝে ভালো দিকও আছে। বর্তমানে আমরা জানতে পারছি কতজন লোক এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া আমরা আক্রান্তদের চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসতে পারছি। এতে ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ লোক সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও এখন টিবি রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। পৃথিবীতে আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় দুই শতাংশে নেমে এসেছে। যদিও টার্গেট এখনো পরিপূর্ণ হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশেই প্রায় ৮৬ শতাংশ টিবি আক্রান্ত রোগী রয়েছে। আর বাংলাদেশ এদের মধ্যে ৭ নম্বরে। তাই আমাদের এ নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ নিয়ে শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই কাজ করছে না। অনেক সংস্থা, গ্লোবাল ফার্মের অনুদানে এনজিও, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে এবং তারা বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছে। ১০ বছর আগে যা ছিল তার থেকে টিবি অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শনাক্তের হারও এখন বেড়েছে। যা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। তবুও প্রতিবছর তিন লাখ নতুন আক্রান্ত অনেক বড় একটি বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আমাদের দেশে আক্রান্ত হয় তিন লাখ ৬০ হাজারের মতো মানুষ, কিন্তু শনাক্ত হয় তিন লাখ সাত হাজার কিংবা ১০ হাজার।’

তিনি বলেন, ‘শনাক্তের বাইরে যারা আছেন তারাও আক্রান্তের ১৫ শতাংশ। এটিও একটি বড় বিষয়। কারণ তারা চিকিৎসা নিচ্ছে না বরং রোগী সৃষ্টি করছে। যারা চিকিৎসা নিচ্ছে না তাদের কারণেই এই রোগ আরও বেশি চড়াচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে পরিবার ও মানুষের মাঝে সতর্কতা বাড়াতে হবে। যাতে টিবি হলেও তারা চিকিৎসার আওতায় আসে। একসঙ্গে যেখানে অনেক মানুষ বাস করে যেমন বস্তি, পোশাকশ্রমিকরা এক জায়গায় গাদাগাদি করে থাকে। এতে তাদের সবচেয়ে বেশি টিবি আক্রান্ত হয়। এক্ষেত্রে একজনের যদি টিবি হয় সবার মাঝেই ছড়িয়ে যায়।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই দেশ থেকে পোলিও-টিটোনাসের মতো টিবিও নির্মূল হবে। ৪০ হাজার লোক বছরে মৃত্যুবরণ করা সহজ বিষয় না। আমরা এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা চাই একজন লোকও যাতে না মারা যায়।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। এছাড়া বক্তৃতা করেন- স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সনাল। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন স্টপ টিবি পার্টনারশিপের নির্বাহী পরিচালক লুসিকা ডিটিউ, দ্য গ্লোবাল ফান্ডের সিনিয়র ফান্ড পোর্টফলিও ম্যানেজার জিওনজিওভার জাকাব।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

জাহিদ মালেক যক্ষ্মা স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর