৫-১১ বছর বয়সীদের করোনা ভ্যাকসিনেশন শুরু আজ
২৫ আগস্ট ২০২২ ০০:০০
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১১ আগস্ট পর্যবেক্ষণমূলক ভ্যাকসিন দেওয়া হলেও পুরোদমে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হচ্ছে আজ (২৫ আগস্ট) থেকে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলেয়া ফেরদৌসী শিখা সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৫টি কেন্দ্রে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ছয়টি কেন্দ্রে দেওয়া হবে শিশুদের প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এর আগে, ১১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। সে সময় বাংলাদেশে শিশুদের মধ্যে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেয় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আবুল বাশার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নীধি নন্দিনী। সেদিন ১৬ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষামূলক প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঢাকায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেওয়া হবে ভ্যাকসিন-
ডিএনসিসি এলাকা
১. আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-১
২. উত্তরা গার্লস হাই স্কুল জোন-১
৩. পল্লবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-২
৪. সেনপাড়া পর্বতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-২
৫. আমতলী স্টাফ ওয়েলফেয়ার বিদ্যালয়- জোন-৩
৬. মহাখালী আব্দুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৩
৭. হাজি ইউসুফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৪
৮. কিশলয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৪
৯. বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৫
১০. বটমলি হোম বালিকা বিদ্যালয়-জোন-৫
১১. কুর্মিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৬
১২. দক্ষিণখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৭
১৩. ফায়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৮
১৪. ডুমনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জোন-৯
১৫. সাঁতারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জোন
ডিএসসিসি এলাকা
১. নীলক্ষেত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-১
২. বঙ্গভবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-২
৩. খিলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-২
৪. আজিমপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৩
৫. সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৪
৬. করাতিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- জোন-৫
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ঢাকার ২১ কেন্দ্রসহ সারাদেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের ৫৫টি জোন ও ৪৬৫টি ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের (প্রাথমিকের শিক্ষার্থী) টিকাদান কর্মসূচি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আগামী ১৪দিন চলবে এ কার্যক্রম।
বুধবার (২৪ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কর্তৃক শিশুদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম কর্মপরিকল্পনায় এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশ সরকার দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে ২৫ আগস্ট থেকে ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড-১৯ টিকাদানের আওতায় আনতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে এ শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। পরে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভাসমূহের স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে শিশুদের জন্য প্রথম পর্যায়ে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছেছে।
টিকাদান লক্ষ্যমাত্রা
১. সারাদেশের প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ ৫-১১ বছর বয়সী শিশুকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২. ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী ১৪ দিনব্যাপী ১২টি সিটি করপোরেশনের ৫৫টি জোন ও ৪৬৫ টি ওয়ার্ড এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
৩. প্রতিদিন ১ হাজার ৮৬০টি টিকাদান টিম কাজ করবে।
৪. ২৫ আগস্ট ১২টি সিটি করপোরেশনের ১৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ভ্যাকসিনের ধরন
১. শিশুদের উপযোগী ফাইজার ভ্যাকসিন।
২. ডোজের সংখ্যা- ২
৩. ডোজের পরিমাণ ০.২ এমএল
৪. প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান- ৮ সপ্তাহ বা ৫৬ দিন
টিকাদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন
১. সুরক্ষা ওয়েবপোর্টাল বা অ্যাপের মাধ্যমে ৫-১১ বছর বয়সসীমার শিশুদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ১৭ ডিজিটের ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
২. যে শিশুদের জন্ম সনদপত্র নেই, তাদের অভিভাবকরা জন্ম সনদপত্র সংগ্রহ করে রেজিস্ট্রেশন করবেন।
৩. বিদেশি পাসপোর্টধারী শিশুদের সুরক্ষা ওয়েবপোর্টাল বা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার পূর্বে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্ধারিত ‘এক্সেল ছকে’ তথ্য দিতে করতে হবে।
কীভাবে ভ্যাকসিন পাবে
কোভিড-১৯ টিকা রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে নিজ নিজ স্কুলে ও পরবর্তীতে কমিউনিটি পর্যায়ে (স্কুল বহির্ভূত শিশু) নিকটস্থ কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন নিতে পারবে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম