মুঘল স্থাপনায় শৌখিন মৎস্য শিকারীদের আমন্ত্রণ
২৬ আগস্ট ২০২২ ১১:২৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় মুঘল আমলে তৈরি ঐতিহাসিক স্থাপনা তোহাখানার পুকুরে ছিপ দিয়ে মাছ ধরার উৎসবের আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ২৪ ঘণ্টার এই উৎসবে মাছ ধরার জন্য গুনতে হবে ১৫ হাজার টাকা। উৎসবে যোগ দেওয়া শৌখিন মৎস্য শিকারীদের জন্য তোহাখানার পাশে অবস্থিত পর্যটন মোটেলে নিজ খরচে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র সুলতান শাহ সুজা তার মুর্শিদ সৈয়দ শাহ্ নেয়ামতউল্লাহর উদ্দেশ্যে শীতকালীন বাসের জন্য তাপনিয়ন্ত্রণ ইমারত হিসেবে নির্মাণ করেছিলেন এই তোহাখানা। শাহ্ সূজা বাংলার সুবাদার থাকাকালে ১৬৩৯-১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে নেয়ামতউল্লাহর প্রতি ভক্তি নিদর্শন হিসেবে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি নির্মাণ করেন। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে তোহাখানার পাশেই রয়েছে শাহ নেয়ামতউল্লাহর মাজার। মাজার ও তোহাখানার সামনেই মোঘল আমলে তৈরি করা হয়েছিল বিশাল এই পুকুর।
ঐতিহাসিক এই পুকুরে ছিপ দিয়ে মাছ ধরার আয়োজন করেছে উপজেলা প্রশাসন। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে পরদিন ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত মাছ ধরা যাবে এই পুকুরে। টিকিট কেটে পুকুরে মাছ শিকারে গুনতে হবে ১৫ হাজার টাকা। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুকুরে ছিপের দিয়ে মাছ শিকারের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) থেকে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সোনালী ব্যাংক সোনামসজিদ শাখার হিসাব নম্বর- ৪৭০২৭৩৪০৭৬৮৭৫ টিকিটের জন্য নির্ধারিত টাকা জমা দিতে হবে। পরে টাকা জমার চালানের কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রদান করে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। একজন ব্যক্তি একটি টিকিটের বিনিময়ে পুকুরে ৪টি ছিপ ফেলতে পারবেন বলে জানা গেছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা ইউএনও মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ছিপ দিয়ে মাছ ধরা অনেকের কাছে ভালো একটি বিনোদন ও শখের বিষয়। তাই এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে বিশাল এই পুকুরটি উপজেলা প্রশাসন ইজারা দেয় না। প্রতিবছর এমন একটি উৎসবের আয়োজন করা হয়। আয়োজনে একটি বিশাল উৎসবের আবহ তৈরি হয়।
তিনি আরও বলেন, পুকুরটিতে বিশাল বিশাল রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন জাতের মাছ রয়েছে। ছিপ দিয়ে মাছ ধরার সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহাসিক তোহাখানার ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে পারবে দর্শনার্থীরা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মাছ শিকারী ও দর্শনার্থীদের জন্য পুকুরের কয়েকশ মিটার দূরে ঐতিহাসিক সোনামসজিদের পাশে পর্যটন মোটেলে নিজ খরচে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এনএস