সুশীলদের সম্পর্কে সাবধান থেকে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহ্বান নানকের
২৬ আগস্ট ২০২২ ১৫:৩৭
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা হয়েছে, কোথায় ছিল মানবতা? ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পরে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা-শেখ রেহানার মানবাধিকার কোথায় ছিল? এদেশের সুশীল সমাজ, যারা সেদিন কথা বলে নাই; হত্যার বিরুদ্ধে নিন্দাটুকু করেন নাই। তারা আজকে বড় বড় কথা বলেন। সেকারণে সুশীলদের সম্পর্কে সাবধান হয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাড়াতে হবে।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। দলের মহিলা বিষয়ক উপকমিটি এ সভার আয়োজন করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি বলেই বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত অরাজক পরিস্থিতির মূল অর্থায়ন ছিল পাকিনস্তানের দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, তারা দেখাতে চেয়েছে বাঙালি রাষ্ট্র পরিচালনা করতে জানে না। ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের কাছে প্রমাণ করা।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা অনুচর হিসাবে ঢুকিয়ে দেয় জেনারেল জিয়াদের। খন্দকার মোশতাকদের দিয়ে স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, সেদিন আমাদের দলের ভেতরে যে অস্থিরতা ছিল, সেই অস্থিরতা শুভফল বয়ে আনে নাই।
জেনারেল জিয়াউর রহমানরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে পারেনি অভিযোগ করে নানক বলেন, সেই সময় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সত্য কথা চাপা দেওয়ার কোনো উপায় নেই। ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে এই সত্য কথাটা বলতেই হবে।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, তখন কিছু শক্তি তারা নেমে গিয়েছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। শেখ হাসিনা,
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জনগণের ভেতরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে, যখন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলো, যখন ছিন্নমূল মানুষদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কারণ বঙ্গবন্ধুর পথ ধরেই তো শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন।
২৫ আগস্ট হরতাল আহ্বান করা সংগঠনের নাম উল্লেখ না করে নানক বলেন, আজকেও আবার সেই শক্তি, নেমেছে আমাদের বিরোধীতা করার জন্য। গতকাল একটি হরতাল পালন হয়ে গেল কেউ টের পেল না। রাস্তায় যানজট, তারপরও কী হরতাল?
খুব সর্তক হতে হবে জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘ওরা আবার নেমেছে। ওরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেবে না। সে কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা নেমেছেন। কারণ আপনারা পাকিস্তানি প্রেসক্রিপশনে চলছেন।
জনগণের সাহস শক্তি দিয়েই আওয়ামী লীগ টিকে ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে বারবার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। চার জাতীয় নেতাকে কারাগারের অভ্যন্তরে হত্যা করে ভেবেছিল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিয়ে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল ২১ আগস্ট, ওই মির্জা ফখরুলের দল।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কুপুত্র তারেক রহমান এখন লন্ডনে বসে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার নির্দেশ দেন। ওখান থেকে নির্দেশ দিয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চান। বাংলার জনগণ শিক্ষা দিয়ে দেবে।
আসেন না খেলোয়াড়ি মনোভাব নিয়ে। আসেন না নির্বাচনে; দেখি বাংলার জনগণ কাকে রায় দেয়। উন্নয়নের পক্ষে রায় দেয়, না ধ্বংসকে রায় দেয়, না অশান্তিকে রায় দেয়, না শান্তির পক্ষে রায়।
নানক বলেন, আমি জানি আপনারা আসতে পারবেন না। কারণ তারেক রহমান যেহেতু আসতে পারবে না। সেই কারণে তারেক রহমান মির্জা ফখরুল সাহেব আপনাদেরকে নির্বাচনে আসতে দেবেন না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচন আসলেই সেই পরাজিত শক্তি নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্যই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অতীতের মতো এবারও তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. সুলতানা শফি এবং সঞ্চালনা করেন দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃকসহ অন্যান্যরা।
সারাবাংলা/এনআর/এএম