এক মাস পর বিদ্যুৎ সমস্যা থাকবে না, জানালেন প্রতিমন্ত্রী
২৬ আগস্ট ২০২২ ২২:০২
ঢাকা (কেরানীগঞ্জ): বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এক মাস বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে পারলে বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। আপনারা ধৈর্য ধরেছেন। আর একটি মাস অপেক্ষা করুন। এক মাস পর বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা থাকবে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আপনাদের কাছে আহ্বান থাকবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারের ব্যাপারে আপনারা সাশ্রয়ী হোন।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে চুনকুটিয়া গার্লস স্কুল মাঠে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে শোক দিবসের আলোচনা সভায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানি সংকটে একটি বড় বিপর্যয়ে পড়েছে বিশ্ব। বর্তমানে জার্মানিতে ২০ শতাংশ গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের অনেক উন্নত দেশও জ্বালানি সমস্যায় ভুগছে। ৫ ডলারের গ্যাস এখন ৫৭ ডলারে গিয়ে থেমেছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১২/১৩ বছরে দেশে বহু ইন্ডাস্ট্রি হয়েছে, ঘরে ঘরে গাড়ি, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ, জায়গায় জায়গায় কলকারখানা হয়েছে। এ জন্য আমাদের প্রচুর বিদ্যুতের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। প্রতিটি বাড়িতে গাড়ি, মোবাইল, ইন্টারনেট ডিজিটাল সুবিধাসহ বাংলাদেশ হওয়ায় আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। আমরা ভালোই ছিলাম। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে আমাদেরও সমস্যায় পড়তে হয়েছে । বিদ্যুৎ শতভাগের পর নিরবচ্ছিন বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা থাকলেও বিশ্বে জ্বালানি বিপর্যয়ের কারণে ছোট দেশ বাংলাদেশে এর ছোঁয়া লেগেছে। আরও এক মাসের মধ্যে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব, আপনাদের আরও একটি মাস কষ্ট করতে হবে।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘সারাদেশে সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ পাম্প চলছে সেচের জন্য। রাত ১২টার পর সারাদেশেই নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। লোডশেডিং থেকে আমরা আসতে আসতে বের হচ্ছি। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’
এ সময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিএনপি ও জামায়াত সরকারের আমলে আ’লীগের বিভিন নেতা-কর্মীর নামে ভুয়া ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার ব্যাপারে নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত ৭ বছর দেশে অত্যাচার, রাহাজানি, লটুপাট করে দুনীতিতে একাধিকবার শীর্ষ হয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। শুধুমাত্র কেরানীগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪০০ মামলা হয়েছিল। এটি কি কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? অনেকে সেই সময় পুলিশের অত্যাচারে বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর তার বদলা নিইনি। তারা এখন বাড়িতে নিশ্চিন্তে ঘুমায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির নেত্রী নিপুণ রায় নিজের বুলি ভুলে গিয়েছেন, কী বলে আর না বলে তিনি নিজেও জানেন না। তারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ অরাজকতা কোনোভাবেই মানুষ মেনে নেবে না।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ এর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ম.ই মামুনের সঞ্চালনায় এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. ইকবাল হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজি মো. মুজিবুর রহমান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আসরারুল হাসান আসু।
এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি মাহমুদ আলম, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ আওয়ামী যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. এইচ এম সেলিম, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মিরাজুর রহমান সুমন, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রাশেদা খানম মিনু, আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর আসাদ হোসেন টিটু, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এহসান আরাফ অনিক, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ছাত্রলীগ সভাপতি গাজি মাসুম বিল্লাহ জুয়েলসহ আরও অনেকে।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আগানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজি জাহাঙ্গীর শাহ খুশি, কোন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইদুর রহমান চৌধুরী ফারুক, বাস্তা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশকর আলীসহ থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
সারাবাংলা/একে