‘বাঙালিরূপী পাকিস্তানিরাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে’
২৭ আগস্ট ২০২২ ১৮:০৩
ঢাকা: বাঙালিরূপী পাকিস্তানিরাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
শনিবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ (মুসপ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যার জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ বঙ্গবন্ধু ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সিম্বল (প্রতীক)। উনার নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে, উনার নেতৃত্বে বাঙালিদের গণজাগরণ হয়েছে। সুতরাং যারা পাকিস্তান ভেঙে অসাম্প্রদায়িক এবং ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের সৃষ্টি মেনে নিতে পারেনি এবং যাদের বুকে রক্তক্ষরণ হয়েছিল তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আর আমি বলব এর নেতৃত্বে ছিলেন খুনি জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান মোটেও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। সে মোটেও বাঙালি ছিলেন না। সে ছিল বাঙালিরূপী পাকিস্তানি। বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি। বাঙালিরূপী পাকিস্তানিরাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল।’
শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মোটেও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। নয় মাসে তিনি পশ্চিম বাংলায় গিয়েছিলেন তাদের চর হিসেবে কাজ করার জন্য। সে পাকিস্তানে বড় হয়েছে। বাংলাও ভালো বলতে পারতেন না। বর্তমানে অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সিআইএ’র প্রতিবেদনে এটা উঠে এসেছে যে, তিনি নয় মাসে পশ্চিম বাংলায় পাকিস্তানি চর হিসেবেই কাজ করেছেন। তিনি যদি সত্যি মুক্তিযুদ্ধে পক্ষে লড়তো তাহলে দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছর পর জয় বাংলা স্লোগানকে পাল্টাতে পারতো না।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনার বিষয়ে বিএনপি আর জামায়াতের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখি না। বিএনপির আজ যারা নেতৃত্বে রয়েছেন তাদের পারিবারিক ইতিহাস খুঁজে দেখেন, তাদের সকলের শরীরে রয়েছে রাজাকারের রক্ত। সুতরাং তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের রূপকার তার কন্যাকে ক্ষমতায় দেখতে চাইবেন না, এটাই স্বাভাবিক।’
তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি মোজাফফর হোসেন পল্টু ৭১ ও ৭৫ সালে নিহত সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যার সঙ্গে জড়িত দণ্ডপ্রাপ্ত অবশিষ্ট খুনিদের দেশে এনে তাদের শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত এই বাংলাদেশকে যাতে আমরা রক্ষা করতে পারি সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি, এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকবেন। কেবলমাত্র সেমিনার, সিম্পোজিয়াম না করে জনগণের সঙ্গে গণসংযোগ করবেন। তারা জনমতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে আপনারা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। আমি আপনাদের কাছে এই আশা রাখছি।’
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল, অধ্যাপক নীম চন্দ্র ভৌমিক, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হাসান-উজ জামান প্রমুখ।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম