পদ্মা সেতুতে বিদেশি ঋণ আছে: জিএম কাদের
২৭ আগস্ট ২০২২ ১৮:৪৪
ঢাকা: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতু অর্ধেকটা উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু এখনো রেলসেতু চালু হয়নি। পদ্মা সেতুতে বিদেশি ঋণ আছে। এটি নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি হয়নি। পদ্মায় রেলসেতু উদ্বোধন করতে আরও অনেক টাকা ব্যয় করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে সুনীল শুভ রায়ের লেখা ‘ছোটদের পল্লীবন্ধু’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এবং পার্টির রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদের এমপি।
জিএম কাদের বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ছোট করতে অসংখ্য মিথ্যাচার করেছে প্রতিপক্ষরা। তারা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দুর্নীতিবাজ বলে মিথ্যাচার করেছে। কিন্তু ক্লিনহার্ট আর ওয়ান ইলেভেনের সময় দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে পল্লীবন্ধু বা জাতীয় পার্টির কোনো নেতার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। আবার ১৯৯০ সালে যে এক কোটি ৯০ লাখ টাকার জন্য হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দণ্ডিত করা হয়েছিল, পরবর্তীতে আদালতই রায় দিয়েছেন ওই টাকা জাতীয় পার্টির দলীয় টাকা। সেই টাকা জাতীয় পার্টিকে ফেরত দিতে নির্দেশও দিয়েছে আদালত।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ৯০ সালের পর থেকে ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি করছে। ক্ষমতা হারালে প্রতিপক্ষ দুর্নীতির মামলা দেয়। পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় গিয়ে সেই মামলা তুলে ফেলেন। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে দুর্নীতির যে মামলাগুলো হয়েছিলো, ক্ষমতায় এসে তারা সেই মামলাগুলো তুলে ফেলেছে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় যেতে না পেরে তাদের নামের মামলাগুলো তুলতে পারেনি। এখন দেশে এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। দুর্নীতি দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে যারা অন্যায়ভাবে স্বৈরাচার উপাধি দিয়েছেন তারাই ১৯৯০ সালের পর সংবিধানে কাটাকাটি করে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বার বার সংবিধান সংশোধন করে, দেশে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এক ব্যক্তির হাতে সকল ক্ষমতা, তিনি যা বলবেন সেটাই আইন। এটা কখনোই গণতন্ত্র হতে পারে না, এভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা হতে পারে না। এক ব্যক্তির হাতে সকল ক্ষমতা থাকলে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অনেক মিথ্যাচার করেছে কিন্তু সফল হয়নি। দেশের সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় অক্ষয় হয়ে আছেন। এখন রাজনৈতিক বাস্তবতা হচ্ছে, গণতন্ত্র নিপাত যাক, আর স্বৈরতন্ত্র চালু থাক।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন ইতিহাসের সব চেয়ে অসাম্প্রদায়িক নেতা। তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সকল ধর্মের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃস্টানদের জন্য পৃথক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন। শুভ জন্মষ্টমিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। চাকরি ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের বৈষম্য দূর করেছিলেন পল্লীবন্ধু। হিন্দু সম্প্রদায়সহ সকল সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন পল্লীবন্ধু।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাপার কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি। অনুষ্ঠানে লালমনিরহাটের শিক্ষানুরাগী এমজি গোলাম এবং ব্যাংকার এ এ এম ওয়াহেদুল ইসলাম জাপা চেয়ারম্যানের হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম