প্রেমের সম্পর্কে শিশুর জন্ম, পরিবার রাজি থাকলে বিয়ের নির্দেশ
২৮ আগস্ট ২০২২ ২০:২৮
ঢাকা: রংপুরের পীরগাছায় কিশোর-কিশোরীর প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঘটনায় উভয় পরিবারের সম্মতি থাকলে বিয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আগামী ৩১ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
যদি উভয় পরিবার বিয়েতে সম্মত থাকে তাহলে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রকে বিয়ে সম্পাদনে সহযোগিতা করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সেলিনা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
পরে আইনজীবী সেলিনা আক্তার বলেন, কিশোর-কিশোরীর অভিভাবক বিয়ের বিষয়ে তাদের সম্মতির কথা আদালতের কাছে জানিয়েছেন।
তখন আদালত বলেছেন, দুজনই অপ্রাপ্তবয়স্ক। কিন্তু তাদের সন্তান হয়েছে। এ কারণে দুই পরিবার বিয়ে করানোর উদ্দেশ্যে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে গেলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করতে বলেছেন। একই সঙ্গে বিয়ের পর এ বিষয়টি আদালতকে প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলা হয়েছে। এরপর আদালত কিশোরের মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে প্রেমের ঘটনায় অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদান ও সন্তান জন্মের পরও তাদের বিয়ে না হওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টের তলব আদেশে অভিভাবকেরা আদালতে হাজির হন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই কিশোরী স্থানীয় দাখিল মাদরাসায় পড়াশোনা করতেন। দেড় বছর আগে ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক করে লাল মিয়ার ছেলে। এমনকি ২০২১ সালের ১ অক্টোবর তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। আরও একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয় তাদের। এক পর্যায়ে কিশোরীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গত ২৫ মে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।
এরপর গত ১ জুন পীরগাছা থানায় কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করে কিশোরীর বাবা হাবিবুর রহমান। এরপর গ্রেফতার করা হয় ওই কিশোরকে। বর্তমানে সে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র আছেন।
এদিকে গত ঈদুল আজহার দুদিন পর ওই কিশোরী সন্তান প্রসব করে। বিয়ে না হওয়ায় সেই শিশু বাবার স্বীকৃতি পায়নি।
আইনজীবী আরও বলেন, ‘ছেলেপক্ষ মেয়ের বাবার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছে। তারা ছেলেকে বিয়ে দিয়ে সন্তানের দায়িত্ব নিতে রাজি। কিন্তু স্থানীয় গ্রাম প্রধান, চেয়ারম্যান-মেম্বারের প্ররোচনায় কিশোরীর বাবা ১০ লাখ টাকা ও তিন বিঘা জমি দাবি করেন। এ কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি।’
পরে বিষয়টি জানিয়ে আদালতে সেই কিশোরের জামিন শুনানিতে উপস্থাপন করি। হাইকোর্ট সব শুনে কিশোর-কিশোরীর বাবা-মাকে ২৮ আগস্ট হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আজ আদালত বলেছেন, যদি দুপক্ষ বিয়েতে রাজি থাকলে এ বিষয়ে যশোর কিশোর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে বলা হয়। একই সঙ্গে বিয়ের পর তা হলফনামা আকারে আদালতকে জানানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর কিশোরের জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানায় আদালত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে