কাজে গাফেলতি: চসিকের প্রকৌশলীকে শোকজ
২৮ আগস্ট ২০২২ ২০:৫০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সড়ক বাতি ব্যবস্থাপনা নিয়ে গাফেলতির অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এছাড়া কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠার পর চসিকের উপ প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল আলমকে সতর্ক করা হয়েছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৯তম সাধারণ সভায় কাউন্সিলরদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরনো নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে মেয়রের সভাপতিত্বে সাধারণ সভা হয়েছে।
সভায় অংশ নেওয়া কয়েকজন কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পশ্চিম ষোলোশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী সভায় অভিযোগ করেন, নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে সড়ক বাতি স্থাপন, সংস্কার ও পরিবর্তনের কাজ চলমান আছে। কিন্তু শাখা সড়কগুলোতে এই কাজে নজরই নেই বিদ্যুৎ শাখার। বিদ্যুৎ শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও শাখা সড়কগুলো আলোকিত করার ব্যাপারে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ শাখা থেকে বাতি সরবরাহ না করায় সন্ধ্যার পর অনেক শাখা সড়কে অন্ধকার থাকে।
অভিযোগ করা হলেও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বারবার নতুন একটি প্রকল্পের অজুহাত দেখান। ওই প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ১০ কিলোমিটার সড়কে সড়ক বাতি স্থাপন করার কথা বলেন। কিন্তু বিদ্যমান ব্যবস্থায় নষ্ট সড়কবাতি পরিবর্তন ও নতুন সড়কবাতি সরবরাহের কোনো সমাধান দেননি। এ নিয়ে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বলে মোবারক আলী অভিযোগ করেন।
কাউন্সিলর মোবারক আলীর বক্তব্য সমর্থন করে সভায় প্যানেল মেয়র ও বাগমনিরাম ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. গিয়াসউদ্দিন বক্তব্য দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন না ঝুলন কুমার দাশ। উপস্থিত কাউন্সিলররা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদকে নির্দেশনা দেন।
এদিকে সিটি করপোরেশনের উপ প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল আলমের বিরুদ্ধে অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে সভায়। এজন্য মেয়র তাকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তবে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোরশেদুল আলম।
সভায় কাউন্সিলরদের পাশাপাশি চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সাধারণত সভা শেষে অংশগ্রহণকারীদের জন্য মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়। তবে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য রোববারের সভায় শুধুমাত্র নাস্তা দিয়ে আপ্যয়ন করা হয়।
পণ্যবাহী ট্রাক-লরি থেকে কর চান মেয়র
সাধারণ সভায় বন্দর ব্যবহারকারী ভারী যানবাহন থেকে কর আদায়ের প্রসঙ্গ ওঠে। এছাড়া আমদানি-রফতানি পণ্য থেকে কাস্টমস যে শুল্ক আদায় করে তার থেকেও সিটি করপোরেশনের জন্য নির্দিষ্ট হারে বরাদ্দের প্রসঙ্গ আলোচনা হয়।
মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের ২০–৩০ টনের পণ্যবাহী ট্রাক ও লরি চলাচলের কারণে নগরের সড়কগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য বন্দর ব্যবহারকারী পরিবহনগুলো থেকে নির্দিষ্ট হারে কর আদায় এবং কাস্টমস থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে চার্জ আদায়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
নগরীতে ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদনের বিষয়টি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ওপর ছেড়ে না দিয়ে সিটি করপোরেশনকেও দায়িত্ব দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মেয়র সভায় জানান। আর বিনা অনুমতি বা মেয়াদোত্তীর্ণ অনুমতিপত্র দিয়ে রাস্তা কাটা হলে ওয়াসা বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মেয়র।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস