নিরাপদ উৎস থেকে পানি পানে এগিয়ে রংপুর
৩০ আগস্ট ২০২২ ০৯:৪৯
ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগে বাড়ছে খাবার পানির নিরাপদ উৎস। তবে এখনও ০.৮৯ শতাংশ পরিবারে খাবার পানির প্রধান উৎস পুকুর, নদী, খাল বা লেক। এছাড়া বৃষ্টির পানি পান করে ০.৪২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি ৩.৭৮ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী, খাল বা লেকের পানি পান করছে। এই সংখ্যা সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে ০.০২ শতাংশ। অর্থাৎ নিরাপদ উৎস থেকে পানি পান করার ক্ষেত্রে এগিয়েছে রংপুর বিভাগের ৫টি জেলা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব চিত্র।
জনশুমারি প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই তথ্যগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এইগুলোর মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। সেইসঙ্গে সরকারের নীতি নির্ধারণ পর্যায়ে এসব তথ্য ভূমিকা রাখে। এছাড়া দেশি আন্তজার্তিক এনজিও ও সংস্থা তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা নেওয়ার ক্ষেত্রে এসব তথ্য কাজে লাগাতে পারবে।’
বিবিএসে’র প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঝরণা বা ছড়ার পানি পান করে ০.১২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া কূপ বা কূয়ার পানি পান করা হয় ০.৩৫ শতাংশ পরিবারে। বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.৫৯ শতাংশ পরিবারের মানুষ।
গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে দেশের সবচেয়ে বেশি ৮৫.৬৬ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এরপরই রয়েছে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করা হয় ১১.৭৪ শতাংশ পরিবারে। এছাড়া অন্যান্য উৎসের পানি পান করা ০.২৪ শতাংশ পরিবারে।
প্রতিবেদনে বিভাগ ভিত্তিক খাবার পানির উৎস সম্পর্কে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৩.৭৮ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী, খাল বা লেকের পানি পান করে করে থাকে। এছাড়া ঝরণা বা ছড়ার পানি পান করে ০.১০ শতাংশ পরিবার। বৃষ্টির পানি ০.১৯ শতাংশ, কূপ বা কূয়ার পানি ১.৯৮ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে সাড়ে ৫ শতাংশ, গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৮৭.৫৬ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.৭১ শতাংশ পরিবার।
খুলনা বিভাগে ৩.৭৬ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী,খাল বা লেকের পানি পান করে করে থাকে। এছাড়া ঝরণা বা ছড়ার পানি কেউ খায় না। বৃষ্টির পানি ০.০১ শতাংশ, কূপ বা কূয়ার পানি ০.০৪ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ৩.১৪ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ৩.৩৮ শতাংশ, গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৮৬.৫৩ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্য উৎস থেকে পানি পান করে 0.১২ শতাংশ পরিবার।
ঢাকা বিভাগে ০.০৪ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী, খাল বা লেকের পানি পান করে করে থাকে। বৃষ্টির পানি ০.০১ শতাংশ, কূপ বা কূয়ার পানি ০.০৩ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.৪৩ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ২৬.৬৪ শতাংশ এবং গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৭২.৬৭ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.১৭ শতাংশ পরিবার।
বরিশাল বিভাগে ২.৮৫ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী, খাল বা লেকের পানি পান করে করে থাকে বরিশাল বিভাগে। বৃষ্টির পানি ১.২৬ শতাংশ, কূপ বা কূয়ার পানি ০.০৮ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.২২ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ৩.৯৪ শতাংশ এবং গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৯১.৫৪ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.১০ শতাংশ পরিবার।
চট্টগ্রাম বিভাগে ০.৫১ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী,খাল বা লেকের পানি পান করে। এছাড়া ঝরণা বা ছড়ার পানি পান করে ০.৫৯ শতাংশ পরিবার। বৃষ্টির পানি ০.০৪ শতাংশ, কূপ বা কূয়ার পানি ১.০৭ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.৪৫ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ১২.২৩ শতাংশ এবং গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৮৪.৭৬ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.৩৬ শতাংশ পরিবার।
রাজশাহী বিভাগে ০. শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী,খাল বা লেকের পানি পান করে। কূপ বা কূয়ার পানি ০.০৮ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.০৭ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ৬.৪২ শতাংশ এবং গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৯৩.২৩ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.১৮ শতাংশ পরিবার।
ময়মনসিংহ বিভাগে ০.০৮ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী,খাল বা লেকের পানি পান করে। বৃষ্টির পানি পান করে ০.০৩ শতাংশ পরিবার। কূপ বা কূয়ার পানি ০.১৮ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.০৬ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ১.৫৩ শতাংশ এবং গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৯৭.৬৪ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.৪৬ শতাংশ পরিবার।
রংপুর বিভাগে ০.০১ শতাংশ পরিবারের মানুষ পুকুর, নদী, খাল বা লেকের পানি পান করে। এছাড়া ঝরণা বা ছড়া এবং বৃষ্টির পানি কোন পরিবার পান করে না। তবে কূপ বা কূয়ার পানি ০.০২ শতাংশ এবং বোতলজাত পানি বা পানির জার থেকে পানি পান করে ০.০৩ শতাংশ পরিবার। সেই সঙ্গে ট্যাপ বা সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ১ শতাংশ এবং গভীর বা অগভীর টিউবওয়েলের পানি পান করে ৯৮.৮৩ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এছাড়া অন্য উৎস থেকে পানি পান করে ০.১০ শতাংশ পরিবার।
সারাবাংলা/জেজে/এমও