ঢাকা: ১১ বছরের শিশু আদিবা কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘আমি কি বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতে পারব? আমার কি দোষ যে আমি বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতে পারব না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন। বাবাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না।’
বংশাল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হোসেনের কন্যা আদিবা ছাড়াও শাহবাগে জড়ো হন শ খানেক পরিবারের সদস্যরা। তাদের কেউ না কেউ গুম হয়ে আর ফিরে আসেননি।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিশ্ব গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের আয়োজনে রাজধানীর শাহবাগ জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরসহ অনেকে।
আদিবার মতোই অন্য একজন তামান্না ইসলাম। তার বাবা ইসমাইল হোসেন বাতেনকে ২০১৯ সালে র্যাব আটক করে।
কিশোরি তামান্না ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা তার স-মিল থেকে বাসার উদ্দেশ্যে আসার পথে তাকে গুম করা হয়। সেদিনই আমরা জিডি করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ র্যাবের বিরুদ্ধে জিডি নেয়নি। ওরা সাধারণ ডায়েরি নিয়েছে।’
তামান্নার দাবি— ‘র্যাব হেডকোয়ার্টার, পুলিশ, ডিবি, ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়, মানবাধিকার কমিশনসহ অনেক জায়গায় ঘুরলেও তার বাবার সন্ধান দিতে পারেনি কেউ।’ এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার বাবাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানান তিনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চৌধুরী আলমের ছোট ভাই খুরশীদ আলম বলেন, ‘২০১০ সালের ২৫ জুন ইন্দিরা রোড থেকে আমার বড় ভাইকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে তার খোঁজ নেই। সরকারকে বলছি, আপনি যদি আমার ভাইকে মেরে ফেলেন, তাহলে এক মুষ্টি মাটি দেওয়ার জন্য লাশটা ফেরত দেন। আর বিচার চাইব না। আর কোনো দাবিও নেই। শুধু ভাইয়ের লাশটা চাই।’