Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্নীতিতে শীর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা: টিআইবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২২ ১২:১৩

ঢাকা: ২০২১ সালের খানা জরিপে বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্নীতি দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে। এই খাতে সেবা নিতে গিয়ে ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।

বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি) উদ্যোগে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ-২০২১’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব তথ্য তুলে ধরেন।

২০২০ সালেরর ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২১শে নভেম্বর সময়ে ওপর তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১৭টি সেবা খাতের দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। টিআইবির প্রতিবেদনে শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্থ খাত হিসাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংস্থাটি থেকে সেবা নিতে আসা লোকজনের ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, সিআইডি, এসবি, ডিবি এবং র‌্যাব সদস্যদের বোঝানো হয়েছে।

টিআইবি প্রতিবেদনে দুর্নীতির ধরন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে এসে সেবাদানকারী সংস্থার লোকজনের কাছ থেকে দায়িত্ব পালনে অবহেলার শিকার হযেছেন। ৪০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষকে ঘুষ বা নিয়মবর্হিভূতভাবে অর্থ লেনদেন করতে হয়েছে। ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ সেবাগ্রহিতা অসদাচারণ ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। ৫ দশমিক ৭ শতাংশ স্বজনপ্রীতি, ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রতারণা, ৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ এবং ৩ দশমিক ৪ শতাংশ সেবাগ্রহিতা আত্নসাৎতের মাধ্যমে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্নীতির শিকার হওয়া ৫৫ শতাংশ সেবাগ্রহিতা ঝামেলা, হয়রানি অথবা নেতিবাচক পরিস্থিতির ভয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ দায়ের করে না। আবার ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ সেবাগ্রহিতা দুর্নীতিকে স্বাভাবিকভাবেই নেয়। তাই অভিযোগ দায়েরের প্রয়োজন অনুভব করেন না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৭টি সেবাগ্রহিতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পর দুর্নীতিতে পর্যায়ক্রমে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে পাসপোর্ট খাত। এই খাতে ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে এসে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এরপরেই রয়েছে বিআরটিএ, এই খাতে সেবা নিতে এসে ৬৮ দশমিক ৩ শতাংশ, বিচারিক সেবা নিতে হবে ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাত থেকে সেবা নিতে এসে ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ সেবাগ্রহিতা দুর্নীতির শিকার হযেছেন। এর পর রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ভুমি সেবা, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, জলবায়ী পরিবর্তন ও দুযোগ খাত। অন্যদিকে ১৭টি খাতের মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয়েছে অন্যান্য খাত (মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন শিক্ষা, ওয়াসা), এর নীচে রয়েছে কর ও শুল্ক, ব্যাংকিং, গ্যাস, এনার্জি, বিমা, কৃষি খাত।

টিআইবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা কাছ থেকে সেবা নিতে গিয়ে ৭২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছে। ২০২১ সালে এসে এর পরিমাণ আরও বাড়ছে। ২০২১ সালে ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। ফলে বলা চলে এই খাতে দুর্নীতির পরিমাণ কমার পরিবর্তে আরও বাড়ছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা প্রযোগকারী সংস্থা হিসাবে তাদের দায়িত্ব ছিল অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা নিজেরাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে।’

সারাবাংলা/জিএস/এএম/পিটিএম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর