Sunday 20 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লাদেনকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এলো ডায়নার মৃত্যুরহস্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২২ ২৩:১৮ | আপডেট: ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৪৮

ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগে মাকসুদুর রহমান ডায়না (তৃতীয় লিঙ্গ) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি পুলিশ বলছে, ডায়নার মরদেহ উদ্ধারের পর আত্মহত্যা হিসেবে ধারণা করা হলেও কিছু আলামত দেখে সন্দেহ হয় যে, এটি হত্যাকাণ্ড। এরপর হত্যার সূত্র খুঁজতে গিয়ে শোয়েব আক্তার লাদেন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। পরে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, ৪৮ বছর বয়সী ডায়নাকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১১ দিন মরদেহ ওই ঘরে পড়েছিল।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩১ আগস্ট) ডিবি পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে লাদেনের সঙ্গে ডায়নার শারীরিক সম্পর্ক চলে আসছিল। সম্প্রতি লাদেন বিয়ে করে ডায়নার কাছ থেকে মুক্তি চাইছিলেন। কিন্তু ডায়না তাকে কোনোভাবেই ছাড়তে চাচ্ছিল না।’

গ্রেফতারের পর লাদেন পুলিশকে জানিয়েছে, গত ১৬ আগস্ট শারীরিক সম্পর্কের এক পর্যায়ে বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আঘাত করে। এতে ডায়নার মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগের ওই বাসায় তার ঘরে এগারো দিন পড়ে ছিল। গত ২৭ আগস্ট ওই বাসা থেকে ডায়নার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ডায়নার ছয় ভাই-বোন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনিও সেখানেই থাকতেন। দুই বছর আগে দেশে ফিরে গোলাপবাগে নিজেদের ওই বাসায় থাকতে শুরু করেন ডায়না। গত ২৭ আগস্ট তার এক ফুপাতো ভাই পুলিশে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

উপ-কমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, ‘ডায়নাকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার (৩০ আগস্ট) নালিতাবাড়ি থেকে লাদেনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে লাদেন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।’

পুলিশ জানায়, তৃতীয় লিঙ্গের ডায়না সমাজের কারও সঙ্গে মিশতেন না। লাদেন তার বাসায় কাজ করতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সমস্যা তৈরি হয় কিছু দিন আগে লাদেন অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করায়। বিয়ের পরও লাদেন ও ডায়নার মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে। কিন্তু লাদেনের ওই বিয়ে আর নতুন জীবন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না ডায়না। আর লাদেনও চাইছিলেন ডায়নার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে মুক্ত জীবনে ফিরতে।

বিজ্ঞাপন

জিয়াউল আহসান বলেন, ‘আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ডায়না ছাড়তে চাইছিলেন না লাদেনকে। শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি লাদেনকে অর্থ দিতেন। লাদেন বলেছেন, অতিষ্ট হয়ে তিনি ১৬ আগস্ট হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আর হাঁটুতে আঘাত করেন। রক্তাক্ত ডায়না অচেতন হয়ে পড়লে লাদেন বাড়ির বন্ধ ফটক না খুলে টপকে পালিয়ে যান।’

পুলিশ বলছে, ডায়নার বাড়ির দেয়াল অনেকটা উঁচু হওয়ায় এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ না থাকায় তার মরদেহ ঘরের ভেতরেই পড়ে ছিল, আশপাশের কেউ বিষয়টি টের পায়নি। ময়নাতদন্তে মাথায় জখমের দাগ দেখে মামলাটি তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

ডায়না লাদেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর