নীলকণ্ঠ হয়ে বেঁচে আছি: প্রধানমন্ত্রী
৩১ আগস্ট ২০২২ ২৩:৪৭
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পিতা-মাতা ও ভাই হারিয়ে বুকে ব্যথা নিয়ে এগিয়ে চলছি। আমি সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করছি আমি কারও বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চাই না। আমি বিচারে বিশ্বাসী। এই চক্রান্তের নেপথ্যে কারা একদিন বের হবে। জানি না আমরা দেখে যেতে পারব কি না? আমি সব শোক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি তো নীলকণ্ঠ হয়ে বেঁচে আছি।
বুধবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ১৪৭ বিধির আওতায় আনীত প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে প্রায় ৫ ঘণ্টা আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সংসদে সর্বোসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সরকারি দল ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির একাধিক সদস্য ওই আলোচনায় অংশ নিলেও বিএনপির কেউ অংশ নেননি। এ সময় সংসদে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা অনুপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন,‘ আমি শোক বুকে নিয়ে সেদিন দেশে এসেছিলাম এদেশের মানুষের জন্য কিছু করার জন্য। আমি বারবারই ভাবতাম এদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। কারণ আমার বাবা এদেশের মানুষের জন্য সারাটা জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাব। কিন্তু আমার চলার পথ সহজ ছিল না। আমি জানি মরতে তো একদিন হবেই কিন্তু মরার আগে আমি মরতে রাজি ছিলাম না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছি। যারা সরাসরি হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু ১৫ আগস্টের চক্রান্ত শুধু আমাদের বিরুদ্ধে নয়, এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে আদর্শের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। কিন্তু এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে যারা জড়িত ছিল আমি বিশ্বাস করি একদিন বেরিয়ে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে একজন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করা নয়, একটি আদর্শকে হত্যা করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় অন্যায় ও অবিচার ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত হয়েছিল।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবা মা ভাই সব হারিয়েছি। আমরা মামলা করতে পারিনি, বিচার চাইতে পারিনি।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য আমি প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছি। কিন্তু সমালোচনা অনেকে করে চলছেন। যেখানে আন্তর্জতিক সংস্থাগুলো বলছে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ না, সেখানে দেশের কিছু সংস্থা বলে যাচ্ছে আমাদের নাকি অনেক ঝুঁকি রয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে যারা বিদেশে পালিয়ে আছেন তাদের তথ্য তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, ‘রাশেদ চৌধুরী আমেরিকায়। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। নূর কানাডায় এবং আর একজন লিবিয়া ও পাকিস্তানে আসা যাওয়া করে। ওইসব দেশগুলো আমাদের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, কিন্তু তারাই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে। তারা আবার মুখে মানবাধিকারের কথা বলে কীভাবে?’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে