Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে কমছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:০০

ঢাকা: দেশ জুড়ে ছড়িয়ে আছে ৫০ ধরনের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। এসব নৃগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বসবাস করছে রাঙ্গামাটিতে আর সবচেয়ে কম লালমনিরহাট জেলায়। তবে দিন দিন কমে যাচ্ছে তাদের বার্ষিক বৃদ্ধির হার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে মোট জনসংখ্যার ১.১০ শতাংশ ছিল এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ। এবার ২০২২ সালে এসে সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ১ শতাংশে। এর মধ্যে, আগে পুরুষের সংখ্যা ছিল ১.১০ শতাংশ আর নারীও ছিল একই। নতুন তথ্যে পুরুষের সংখ্যা কমে হয়েছে ১.০১ শতাংশ এবং নারী ০.৯৯ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি রয়েছে চাকমা নৃগোষ্ঠীর মানুষ। তাদের সংখ্যা চার লাখ ৮৩ হাজার ২৯৯ জন। এরপরই আছে দুই লাখ ২৪ হাজার ২৬১ জন মারমা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী রয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৮ জন। চতুর্থ অবস্থানে সাঁওতাল আছে এক লাখ ২৯ হাজার ৪৯ জন। বাকি সব জনগোষ্ঠী মিলিয়ে রয়েছে এক লাখের নিচে। তবে সবচেয়ে কম জনগোষ্ঠী হচ্ছে ‘ভিল’, বসবাস করে মাত্র ৯৫ জন।

দেশে বসবাসরত অন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো হচ্ছে- ওরাঁও, কড়া, কন্দ, কোচ, কোল, খারওয়ার, খারিয়া, খাসিয়া, খিয়াং, খুমি, গঞ্জু, গড়াইত, গারো, গুর্খা, ডালু, চাক, তঞ্চঙ্গা, তুরি, পাংখোয়া, পাত্র, পাহাড়ী, বড়াইক, বম, বর্মণ এবং বাগদী। আরও আছে বানাই, বেদিয়া, ভিল, ভুঁইমালী, ভূমিজ, মণিপুরী, মালো বা ঘাসিমালো, মাহাতো বা কুর্মি, মাহালী, মুন্ডা, মুসহর, ম্রো, রাখাইন, রাজোয়ার, লুসাই, লোহার, হাজং, হুদি এবং হো নৃগোষ্ঠীর মানুষ।

জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের পরিচালক দিলদার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ১০ বছরের ব্যবধানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বেড়েছে মাত্র ৬৪ হাজার ১৮ জন।  তবে এই বৃদ্ধির হার খুব বেশি নয় বরং ১০ বছর আগের তুলনায় কম। কিন্তু কি কারণে তাদের বৃদ্ধির হার কমছে এটা বলা সম্ভব নয়। কেননা বিবিএস কারণ নিয়ে কাজ করে না। শুধু তথ্য সরবরাহ করে। কারণ খুঁজে দেখবেন গবেষকরা।’

বিজ্ঞাপন

জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশে বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন ১৬ লাখ ৫০ হাজার ১৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ আট লাখ ২৪ হাজার ৭৫১ জন এবং নারী আট লাখ ২৫ হাজার ৪০৮ জন। ২০১১ সালের আদমশুমারিতে পাওয়া তথ্যে ওই সময় দেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ছিল ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৪১ জন।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ১০ বছর আগে ছিল ১.৪৬ শতাংশ (সমন্বয়ক করা তথ্যে ১.৩৭ শতাংশ)। বর্তমানে এই বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.২২ শতাংশে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিভাগভিত্তিক সবচেয়ে বেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে চট্টগ্রাম বিভাগে নয় লাখ ৯০ হাজার ৮৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ আছে চার লাখ ৯৬ হাজার ৬৯৪ জন এবং নারী চার লাখ ৯৪ হাজার ১৬৬ জন। এদিকে সবচেয়ে কম বসবাস করে বরিশাল বিভাগে মাত্র চার হাজার ১৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই হাজার ১৮৯ জন এবং মহিলা এক হাজার ৯৯২ জন।

অন্যান্য বিভাগে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষের সংখ্যা হলো- ঢাকা বিভাগে ৮২ হাজার ৩১১ জন। খুলনা বিভাগে ৩৮ হাজার ৯৯৩ জন। রাজশাহী বিভাগে বসবাস করে দুই লাখ ৪৪ হাজার ৫৯২ জন। সিলেট বিভাগে এক লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৪ জন। রংপুর বিভাগে ৯১ হাজার ৭০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬১ হাজার ৫৫৯ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, জেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি রাঙ্গামাটিতে তিন লাখ ৭২ হাজার ৮৬৪ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে। সবচেয়ে কম লালমনিহাট জেলায় বসবাস করে ১১৮ জন। অন্য জেলার মধ্যে খাগড়াছড়িতে তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩৭৮ জন বসবাস করে।

এছাড়া বান্দরবানে এক লাখ ৯৭ হাজার ৯৭৫ জন, চট্টগ্রামে ৪৮ হাজার ১৪৪ জন এবং ঢাকায় বসবাস করে ২৭ হাজার ১২৯ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ।

সারাবাংলা/জেজে/এমও

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী চাকমা জনশুমারি ত্রিপুরা পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস মারমা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর