‘ডাক্তার-নার্স ঠিকমতো হাসপাতালে আসে কিনা দেখতে হবে’
১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:১৮
ঢাকা: জনপ্রতিনিধি ও হাসপাতাল প্রধানের অনেক দায়িত্ব উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডাক্তার-নার্স ঠিকমতো আসে কিনা সেটি দেখতে হবে। টয়লেট ও বেড ঝকঝকে থাকতে হবে। তবেই আন্তর্জাতিক মানের সেবার পরিবেশ ঠিক থাকবে। আর এটি যাতে ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেটি দেখার দায়িত্ব পর্ষদের।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ছয় জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য স্থাপনা ও প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এদিন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসেম খানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বুড়িচং উপজেলায় এক্সরে মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে। মানুষ সেবা পাচ্ছে কি না সেটি দেখার জন্য মাসিক যে কমিটি আছে সেটি ঠিকমতো করতে হবে। নতুবা মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবে না। সরকারপ্রধান চান, মানুষ যাতে চাহিদা অনুযায়ী সেবা পায়।’
অনুষ্ঠানে ছয় জেলার ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া এসব জেলার স্বাস্থ্যবিভাগের বরাদ্দপত্র স্ব স্ব সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা আহমেদ বলেন, ‘আমার দুই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্র আছে, কিন্তু জনবল নেই। কনসালটেন্টরা থাকেন না। এসব সংকটে মানুষকে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত এগুলোর ব্যবস্থা করা দরকার।’
জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির অভাব নেই, কিন্তু জনবলের অভাব রযেছে। তবে গত ৫০ বছরে ডাক্তার যেখানে ১৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ হয়েছে, করোনার দুই বছরে সেটি তিনগুণ বেড়েছে। নার্সও দ্বিগুণ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করেছি বলেই স্বাস্থ্যসেবা এগিয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করেছি, মাঠে নেমেছি। যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার তা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেবাকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু করোনা মহামারিতে কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ইউনিয়ন থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে। মেশিন, লোকবল ঠিক আছে কিনা, মানুষ সেবা পাচ্ছে কিনা সেগুলো দেখা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। সেখানে ৩০-৩২ ধরনের ওষুধ পাচ্ছে রোগীরা। বাংলাদেশে এখন দেড় লাখ শয্যা। প্রতিটি বড় হাসপাতালে আইসিইউ আছে। পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের হার যেটা এক সময় দুই ভাগও ছিল না, এখন তা ৬৫ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন অনেক হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান বেড়েছে। ব্রেন টিউমার, বাইপাস সার্জারির মতো রোগের অপারেশন দেশেই হচ্ছে। কোনো ওষুধের অভাব নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন সংক্রান্ত সব কাজে ৪৫ হাজারের মতো টাকা ব্যয় হয়েছে। ৩০ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। কুমিল্লাতেই আইসিইউ, আরটিপিসিআরসহ জিন এক্সপার্ট মেশিন দেওয়া হয়েছে। ফলে সবধরনের জরুরি সেবা মিলবে জেলাতেই। ঢাকায় কষ্ট করে যেতে হবে না আর।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক একেএম আমিুরুল মোর্শেদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম