Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রায়েরবাজারে হচ্ছে নতুন পয়ঃশোধনাগার, ব্যয় ১৭৮০ কোটি টাকা

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:১৪

ঢাকা: রায়েরবাজার এলাকায় হচ্ছে নতুন পয়ঃশোধনাগার। এজন্য রায়েরবাজার এলাকায় পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বসিলা, কল্যাণপুর, শ্যামলী, গাবতলী ও তার সঙ্গে এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ সম্ভব করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ওয়াসা।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন কর্তৃপক্ষ (ঢাকা ওয়াসা) ঢাকা মহানগরবাসীদের সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন সেবা দেয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন আইন ১৯৯৬ অনুযায়ী বাণিজ্যিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঢাকা ওয়াসা নগরবাসীদের সেবা দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা ওয়াসার ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে ঢাকা মহানগরীরর সুয়ারেজ ব্যবস্থা প্রায় ৯৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বিভিন্ন ব্যাসের ভূগর্ভস্থ সুয়ারেজ লাইন, ২৬টি সিউয়েজ লিফট স্টেশন এবং পাগলা এলাকায় একটি পয়ঃশোধনাগারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসা মহানগরবাসীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আইনগতভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও বিভিন্ন কারণে ঢাকা ওয়াসা সার্ভিস এলাকার মাত্র ৩০ শতাংশ এলাকায় সুয়ারেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

মহানগরীতে ৩৫০০ কিলোমিটার পানি সরবরাহে পাইপলাইন থাকলেও সুয়ায়েজ লাইন আছে মাত্র ৯৩০ কিলোমিটার। মহানগরীর ৭০ শতাংশ এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় স্থাস্থ্য ও পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে।

পর্যায়ক্রমে মহানগরীরর শতভাগ এলাকা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য বিশ্বব্যাংক সহায়তাপুষ্ট ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রজেক্ট শীর্ষক প্রকল্প হতে ঢাকা মহানগরীর সিউয়েজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রণীত এ মাস্টারপ্ল্যানে ঢাকা মহানগরী এবং আশপাশের সব এলাকাকে ১১টি স্যানিটেশন ক্যাজমেন্টে বিভক্ত করা হয়েছে। বিভক্ত করা স্যানিটেশন ক্যাচমেন্টগুলো হচ্ছে, ঢাকা পূর্ব-দাশেরকান্দি সিউয়েজ ক্যাচমেন্ট, ঢাকা পশ্চিম-মিরপুরম, রায়েরবাজার, ঢাকা দক্ষিণ-পাগলা, ডিএনডি, ঢাকা উত্তর-উত্তরা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, টঙ্গী, গাজীপুর এবং কেরাণীগঞ্জ সিউয়েজ ক্যাচমেন্ট।

মাস্টার প্ল্যানে ১১টি স্যানিটেশন ক্যাচমেন্টের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি রায়েরবাজার (কল্যাণপুর) সিউয়েজ ক্যাচমেন্ট এলাকায় অবস্থিত। মাস্টারপ্ল্যানে ঢাকা রায়েরবাজার সিউয়েজ ক্যাচমেন্ট এলাকায় সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখানো হয়েছে। এজন্য প্রকল্প এলাকায় সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি, ড্রয়িং, ডিজাইন ও বিডিং ডকুমেন্ট করার জনন্য ঢাকা ওয়াসার ঢাকা ওয়াটর সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট (ডিডব্লিউএসএনআই) প্রকল্পের আওতায় এডিবির অর্থায়নে একটি কনসালটেন্ট প্যাকেজ কন্সসালটেন্ট সার্ভিস ফর প্রজেক্ট ডেভলপমেন্ট ফ্যাসিলিটি চলমান রয়েছে। প্রকল্প এলাকায় সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের প্রয়োজনীয় অর্থ সংকুলানের ব্যাপরে এডিবি হতে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।

ঢাকা মহানগরীর স্যুয়েজ মাস্টার প্ল্যানে সুপারিশ অনুসারে রায়েরবাজার স্যুয়েজ ক্যাচমেন্ট এলাকায় স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রাথমিক ধাপ হিসাবে জনবসতির সংখ্যা ও খালি জায়গার পরিমাণ বিবেচনায় টেংগর মৌজায় উত্তর সোনাটেঙ্গেও ও দক্ষিণ সোনাটেঙ্গও, কাটাসু, চরকামরাঙ্গী ও মিরপুর মৌজার ৫৫.৯৭১ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিত কর্মকার সারবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরে পয়ঃনিস্কাশন নিশ্চিত করে ঢাকা রায়েরবাজার, হাজারিবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বসিলা, কল্যাণপুর, শ্যামলী ও গাবতলী এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশবান্ধব ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের জন্য ৫৫.৯৭১ একর ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হবে। তাই প্রকল্পের আওতায় অধিগ্রহণ করা ভূমিতে পৃথক প্রকল্পের আওতায় সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) নির্মাণ করা হবে। এসটিপি নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়নের বিষয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) হতে প্রাথমিক সম্মতি পাওয়া গেছে।’

সারাবাংলা/জেজে/এমও

নতুন পয়ঃশোধনাগার রায়েরবাজার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর