বেড়েছে আউশের চাষ, এক উপজেলাতেই মিলবে হাজার টন ধান
৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১১
নীলফামারী (কিশোরগঞ্জ): অনাবৃষ্টিসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বেড়েছে আউশ ধানের চাষ। গতবছর এ উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হলেও এবছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪০ হেক্টরে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, এবছর আউশের বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে ১০৭৫ মেট্রিক টন ধান দেশের খাদ্য ভাণ্ডারে যুক্ত হতে যাচ্ছে। লাভজনক আউশ ধান চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রায় এক হাজার কৃষকের মাঝে কৃষি প্রণোদনা, বীজ সহায়তাসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির আনাচে-কানাচে পতিত জমিসহ মাঠের পর মাঠ জুড়ে আউশের চাষ হয়েছে। চারিদিক দেখলে মনে হয় যেন সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ। দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বিকশিত করছে।
বাহাগিলি ইউনিয়নের চাষি আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আউশের চাষ করেছি। এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে আউশ ক্ষেতে সেচ দিয়েছি। বর্তমানে ধান পাকতে শুরু করেছে।’ প্রতি বিঘায় খরচ বাদে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন বলেও আশা করছেন তিনি।
নিতাই ইউনিয়নের চাষি আকরাম মিয়া বলেন, ‘আমি ৭ বিঘা জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছি। আর এক সপ্তাহ পর ধান কাটতে পারব। প্রতিবিঘায় যে ধান হবে তার পাশাপাশি খড়ও বিক্রি করা যাবে। সর্বোপরি খরচ বাদে সবমিলিয়ে বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে।’
উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বাবু বলেন, ‘আগে আউশের আবাদ সর্ম্পকে কোনো ধারণা ছিল না। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকরা আউষের চাষাবাদ সর্ম্পকে জানতে পেরেছে। আগে আগাম আলু চাষের জন্য জমি পতিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে আউশ ধান চাষের পর কৃষকরা ধান বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে আলু চাষাবাদ করছে। এতে করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে চাষ হওয়ার কারণে আউশ ধান চাষাবাদে খরচ তুলনামূলক কম। তাছাড়া ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও আউশ আবাদ পরিবেশবান্ধব। এ উপজেলার কৃষকরা আগে জমি পতিত রেখে শুধু আগাম আলু এবং ভুট্টা চাষ করতেন, কিন্তু বর্তমানে একই জমিতে আউশ ধানের পর আলু এবং আলু চাষের পর ভুট্টার চাষ করা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এমও