‘গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের মাইনাস করতেই ১/১১ ঘটানো হয়েছিল’
৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:০০
ঢাকা: বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রবিশ্বাসীদের মাইনাস করতেই দেশে ১/১১ ঘটানো হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম যৌথভাবে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১/১১‘র সময় মাইনাস টু বলে একটা কথা খুব প্রচার হয়েছিল। মাইনাস টু তো হয়নি, হয়েছে মাইনাস ওয়ান। ওই চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে যারা বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে যারা বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদেরকে মাইনাস করতে চায় তারা। তাহলে তাদের পক্ষে এখানে নিরঙ্কুশ প্রভাব বিস্তার করা সুবিধা হবে।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানকে ওই সময়ে যে বন্দি করা হয়েছিল, ওটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। ওটা ছিল সামগ্রিকভাবে এদেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির যে স্বপ্ন রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, সেই স্বপ্নকে সেদিন বন্দি করা হয়েছিল। সেটি তারই চক্রান্তের অংশ। যে চক্রান্তের অংশ হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল, যে চক্রান্তের অংশ হিসেবে ৯ বছর স্বৈরাচার এদেশের জনগণের ওপর নির্যাতন-অত্যাচার করেছে, যে চক্রান্তের অংশ হিসেবে ১/১১ ঘটেছে, তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
‘লক্ষ্য ছিল একটি যে, যারা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে কথা বলে, যারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়, যারা বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চায় তাদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। সেই কারণেই যারা জনপ্রিয়, যারা জনগণকে সংগঠিত করতে পারে, যাদের কথায় জনগণ একত্রিত হয় সেই নেতাদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে’-বলেন মির্জা ফখরুল।
তারেক রহমানের সাংগঠনিক সক্ষমতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের আগে তৃণমূলে সংগঠনের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তিনি বিএনপিকে একেবারে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি বিএনপির নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন। অনেকগুলো বক্তব্যে ওই সময় তিনি কীভাবে দেশকে দেখতে চান, কীভাবে দেশের অর্থনীতি পরিবর্তন করতে চান, কীভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন আনতে চান- এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করেছিলেন।’
‘তার অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা আছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর অতিদ্রুত তিনি গোটা সংগঠনকে একটা কাঠামোর মধ্যে আনার পথ প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। অঙ্গসংগঠনগুলো গোছাচ্ছেন, বিএনপিকে গোছাচ্ছেন। এখানেই হয়েছে কাল। যেহেতু বিএনপি আবার জেগে উঠছে, বিএনপি আবার ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠছে- সুতরাং তাকে আবার দমিয়ে ফেলতে হবে, তাকে আবার ফেলে দিতে হবে-এটাই হচ্ছে তাদের (সরকার) লক্ষ্য।”
সংগঠনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিননের সভাপতিত্বে ও বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আখতার, শ্যামা ওবায়েদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোরতাজুল করীম বাদরু, মোস্তাফিজুর রহমান, ফজলুর রহমান খোকন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সারাবংল/এজেড/একে