গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই
৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:২৯
ঢাকা: খ্যাতিমান গীতিকবি, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার (৭৯) আর নেই। তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টাও ছিলেন।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যারা যান তিনি। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ভাগনে ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় সংবাদমাধ্যমের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মৃত্যকালে স্ত্রী এক ছেলে, এক মেয়ে এবং নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার মেয়ে দিঠি আনোয়ার আজ আমেরিকা থেকে দুবাই আসার কথা রয়েছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ এখনো হয়নি। তিনি দেশের আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
কিংবদন্তী এই গীতিকার ও চলচ্চিত্র পরিচালকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কর্ম জীবনে ২০ হাজারের অধিক গান লিখেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার অনেক গান কালজয়ী হয়েছে। এর মধ্যে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’ উল্লেখযোগ্য। বিবিসি বাংলা’র জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় তার লেখা তিনটি গান রয়েছে।
২০০২ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন তিনি। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একাধিকবার বাচসাস পুরস্কার, বিজেএমই অ্যাওয়ার্ড, ডেইলি স্টার কর্তৃক লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ডসহ তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা ১১০।
১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ সিনেমার মধ্যে দিয়ে প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান লেখেন তিনি। ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লেখাতেও দক্ষতা দেখান তিনি। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র নান্টু ঘটক ১৯৮২ সালে মুক্তি পায়। প্রায় ৪১টি সিনেমা পরিচালনা করেন তিনি।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস