ঋণ খেলাপিদের ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট
৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৫৬
ঢাকা: ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড় দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা পরিপত্রের (সার্কুলার) বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সম্প্রতি এ রিটটি দায়ের করেন।
বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। রিটে অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ জুলাই ঋণখেলাপিদের বড় ছাড় দিয়ে পরিপত্র জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং শ্রেণিকৃত ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার যুক্তি দেখিয়ে ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড় দেওয়া হয়। ফলে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে এখন আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই চলবে। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ। এসব ঋণ পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো। খেলাপি ঋণ নবায়ন করার পর আবার নতুন করে ঋণও পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে ঋণ পুনঃতফসিলের মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিনই এটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আব্দুর রউফ তালুকদার নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দেওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মাথায় বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন এ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করার পুরো ক্ষমতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, কোনো ইচ্ছাকৃত বা অভ্যাসবসত ঋণখেলাপির ঋণ নবায়নের সুযোগ দেওয়া যাবে না। কোনো খেলাপি ঋণ সাধারণত তিনবার নবায়ন করা যাবে। তবে ঋণ আদায়ের স্বার্থে খেলাপি ঋণ চার দফায়ও নবায়ন করা যাবে। চার বারের বেশি নবায়ন করা যাবে না।
সার্কুলারে বলা হয়, প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ১০০ কোটি টাকার কম মেয়াদি ঋণ গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ৬ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে। ১০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার কম মেয়াদি ঋণ ৭ বছরের জন্য এবং ৫০০ কোটি টাকা ও এর বেশি অংকের ঋণ সর্বোচ্চ ৮ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে।
চলমান ও তলবি ঋণের ৫০ কোটি টাকার কম ৫ বছরের জন্য, ৫০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকার ঋণ ৬ বছরের জন্য, ৩০০ কোটি টাকা ও এর বেশি ব্যাংকের ঋণ ৭ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে।
কৃষিঋণ প্রথম দফায় তিন বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে। দ্বিতীয় ও পরবর্তী সময়ে প্রতি দফায় আড়াই বছরের জন্য করা যাবে। ঋণের অংক বিবেচনায় ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে গ্রেস পিরিয়ড সর্বোচ্চ ৬ মাস হবে। তবে গ্রাহকের ক্ষতি বিবেচনায় গ্রেস পিরিয়ড সর্বোচ্চ এক বছর করা যাবে।
সার্কুলারে বিভিন্ন ঋণ নবায়নের ক্ষেত্রে ডাউন পেমেন্টের হারও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/আইই