‘কোথাও ব্যালটে কোথাও ইভিএমে নির্বাচন করা উচিত না’
৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:১৩
ঢাকা: জাতীয় পার্টি (জেপি) নির্বাচনে প্রযুক্তি ব্যবহারের পক্ষে মত জানিয়েছে দলটি বলেছে, নির্বাচন কমিশন যদি এক সাথে ৩০০ আসনের সকল ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করতে না পারে, তাহলে ইভিএম এ নির্বাচন করা সঠিক হবে না। কিছু আসনে ইভিএম হলো কিছু আসনে হলো না, যেটা ডিসক্রিমিনিশন হয়।
এতে আরও বলা হয়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোথাও ব্যালট কোথাও ইভিএম এটি করা উচিত না। যদি ৩০০ আসনের নির্বাচন ইভিএমে শেষ করা সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে ৩০০ আসনের কিছু কিছু ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে এ নির্বাচন করা যেতে পারে।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে এমন সুপারিশ করে জাতীয় পার্টি (জেপি)। সংলাপে জেপি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।
অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সংলাপে ইসির পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ও সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপের পর শেখ শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে তার দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
সংলাপে জেপি’র সুপারিশগুলো হলো:
১) নির্বাচন বর্জন, হরতাল, সংঘাত বা অনির্বাচিত ব্যক্তির দেশ পরিচালনায় জাতীয় পার্টি (জেপি) বিশ্বাস করে না।
২) বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেনি। মূলত বৃহৎ রাজনৈতিকদলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা সৃষ্টি করে এবং কোন না কোন সময় নির্বাচন কমিশনও এতে জড়িয়ে পড়ে। তাই গণতন্ত্রের চর্চা সঠিকভাবে হয় না। গণতন্ত্রকে রক্ষা বা পাহারা দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৩) জাতীয় সংসদের সীমানা বর্তমানে যেভাবে আছে তা বহাল রাখা যেতে পারে। তারা বড় কোন পরিবর্তন না করার পক্ষে।
৪) বিতর্ক এড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশনকে মিডিয়ার সামনে কম কথা বলা প্রয়োজন।
৫) নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠু করলে সব দলই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তবে, কোন দলকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করা নির্বাচনে কমিশনের কাজ নয়।
৬) নির্বাচন কমিশনের কাজ যেনো নিরপেক্ষ হয়, এটা দৃশ্যমান হতে হবে।
৭) সব দল ও প্রার্থীর প্রতি নির্বাচন কমিশনের সমান ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৮) যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধী বা যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি যাতে ভোটকেন্দ্রে ও নির্বাচনে দায়িত্ব না পায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে
৯) প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচনের কমিশনের অধীনে না আনলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩৯টি দলকেই সংলাপে আসার সময় জন্য দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে বিএনপিসহ নয়টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি। ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছিল ৩০টি দল। এর মধ্যে দু’টি দল (জেপি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি) আসতে না পারার কারণ দেখিয়ে পরবর্তীতে সংলাপের জন্য সময় চেয়েছিল। পরে দল দু’টিকে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংলাপে বসার সময় দিয়েছিল ইসি।
যে নয়টি দল সংলাপ বর্জন করেছে তারা হলো- বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।
সারাবাংলা/জিএস/এমও