‘প্রধানমন্ত্রী আগে ঘুরে আসুক, পরে কমেন্ট’
৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:৩৮
ঢাকা: ভারত সফর শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর এ ব্যাপারে কমেন্ট করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
সাবেক অর্থমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনা সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাকে সাংবাদিক ভাইয়েরা চিরকুট পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে কথা বলতে। আমি গতকাল বলেছি, এই বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না। কারণ আমাদের অভিজ্ঞতা খুব তিক্ত, ফ্রাস্ট্রেশনের অভিজ্ঞতা, হতাশার অভিজ্ঞতা।’
‘আমরা প্রত্যেকবার আশা করেছি যে, এবার প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য কিছু নিয়ে আসবেন। প্রত্যেকবার দেখেছি অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে, নিরাশার সঙ্গে- দিয়ে এসেছেন, নিয়ে আসেননি। সুতরাং ওই একটাই কমেন্ট। আগে আসুক উনি (প্রধানমন্ত্রী) ঘুরে। কী নিয়ে আসছেন আমরা দেখি। তারপরে কমেন্ট করব’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাইফুর রহমানের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ অত্যন্ত যোগ্য সফল অর্থমন্ত্রীকে হারিয়েছে। আমাদের খুব কষ্ট হয়, লজ্জা হয়- আমরা যখন বর্তমান অর্থমন্ত্রীর (আ হ ম মুস্তফা কামাল) দিকে তাকিয়ে দেখি। খুব কষ্ট হয়, লজ্জা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা একটা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। এই সময় সাইফুর রহমান যদি আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তিনি আমাদের সহযোগিতা করতেন। অন্যদিকে, এই যে ভ্রান্ত উন্নয়ন বিপ্লব সৃষ্টি করেছে এই সরকার, সেটার আসল চেহারা তিনি উদঘাটন করতে সক্ষম হতেন এবং এই সরকারের যে মূল চেহারা সেটাকে উন্মোচন করতেও তিনি সক্ষম হতেন।’
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সাইফুর রহমান বাংলাদেশের উন্নয়নে, টেকসই উন্নয়নের জন্য যেটা দরকার সেটা করতে কোনো রকমের ভ্রুক্ষেপ করতেন না। অনেকে বলেন যে, অর্থমন্ত্রী হিসেবে উনি একটু কঠিন ছিলেন। কঠিন সেখানেই ছিলেন যেখানে তিনি দেখেছেন এখানে অপব্যয় হবে। সেখানে কিন্তু তিনি কোনো রকমের ছাড় দেননি।’
‘যেখানেই দেখেছেন এই কাজটা করলে দেশের জন্য, মানুষের জন্য এবং দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো হবে সেটার জন্য অর্থ খরচ করতে তিনি কখনো পিছপা হননি। আমরা যখন ২০০১ সালে ফের ক্ষমতায় আসলাম, আমাকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এখানেও আমার অভিজ্ঞতা হলো, তিনি (সাইফুর রহমান) এদেশের শিক্ষা-স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যা প্রয়োজন করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন’- বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এম সাইফুর রহমান দেশের স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ার জন্য ভ্যাট থেকে শুরু করে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আজকে সেগুলো ব্যবহার না করে লুটপাট করা হচ্ছে। তিনি যদি বেঁচে থাকতে এর বিরুদ্ধে মাঠে নামতেন।’
এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর পরিচালানায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবেদ রাজা প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম