Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুদককে ‘পাত্তা’ দিলেন না শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:১৬

বরিশাল: বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে অভিযান চালাতে গিয়ে কলেজ অধ্যক্ষসহ অন্যদের বাধার মুখে পড়েছে দুদক টিম। হাসপাতাল ও কলেজে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করা, হাসপাতালের চেয়ে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালাতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত দুদক বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজকুমার সাহার নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি টিম এই অভিযান চালান। অভিযানে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে দুদক। এসময় দুপক্ষের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। দুদক টিমকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কলেজ অধ্যক্ষ।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিন ৩-৪শ রোগী দেখেন। এমনকি সরকার নির্ধারিত সকাল ৮টার অফিসেও তারা আসেন না। এ সব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিনের কক্ষে গেলে তাকে পাননি দুদক টিম। এমনকি অফিসের একজন পিয়নও উপস্থিত ছিলেন না।

দুদকের টিম আসার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে কার্যালয়ে আসেন কলেজ অধ্যক্ষ। দুদক টিম কলেজ অধ্যক্ষের কাছে চিকিৎসকদের এক সপ্তাহের বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা দেখতে চান। তবে তা দিতে অস্বীকার করেন কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহীন। এ নিয়ে দুদকের সঙ্গে বাদানুবাদেও জড়ান তিনি।

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অভিযানকারী টিমের ছবি তুলে রাখার হুমকি দিচ্ছেন অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহিন এবং কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময়ে দুদক টিম তাদের পরিচয় দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলে নিজেদের অভিহিত করেন। তখন কলেজ অধ্যক্ষ পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আর আমি (অধ্যক্ষ) কি উড়ে এসেছি নাকি!

বিজ্ঞাপন

এর কিছুক্ষণ পরে কলেজের অন্যান্য চিকিৎসক আসতে শুরু করেন। সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসকরা এসে অধ্যক্ষের কক্ষে বায়েমেট্রিক হাজিরা দিতে শুরু করেন।

দুদক টিম চলে যাওয়ার পরে কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের টিম আমার কক্ষে এসে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। তারা আমাকে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা বলে অভিহিত করেন। আমার কক্ষে ঢুকে যে আচরণ করেছেন, তা তারা করতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি জেনেছি তাদের কেউ একজন ডাক্তার দেখাতে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ জন্য তারা এসেছেন চিকিৎসকরা কখন আসেন, তা দেখার জন্য। দুদক টিম আমার কাছে বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা চান। আমি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের (ডিজি) সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি বলেছেন, দুদক টিম যদি আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে না আসে, তাহলে  হঠাৎ এসে কাগজ চাইতে পারে না। এগুলো দেইনি দেখে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন।’

মনিরুজ্জামান শাহিন চিকিৎসকদের দেরিতে অফিসে আসার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘তা ঠিক আছে। আবার অনেক সময়ে চিকিৎসকরা দেরিতে এসে দায়িত্ব পালন করে পাঁচটার সময়েও যান। তা কিন্তু কেউ বলেন না। তবে ডাক্তাররা অতিরিক্ত দেরিতে এলে তা কেউ মেনে নেবে না।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগত চেম্বার করা যাবে না, এমন কোনো নির্দেশনা আছে বলে জানা নেই। যদি থাকে তাহলে চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বার করবেন না। তাছাড়া কতজন রোগী দেখতে পারবেন, সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই।’

অভিযানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দেবব্রত মণ্ডল।

তিনি বলেন, ‘অভিযান সর্ম্পকে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় থেকে বিস্তারিত জানানো হবে।’

সারাবাংলা/একে

টপ নিউজ দুর্নীতি দমন কমিশন শেবাচিম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর