স্কুলছাত্রী কণিকা রানী হত্যায় আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৩০
ঢাকা: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহিপুর এসএএম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী কণিকা রানী ঘোষকে কুপিয়ে হত্যায় বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ এবং আসামির জেল আপিল খারিজ করে বিচারপতি এএনএম বসির উল্লাহ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি । আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী নারগিস আক্তার।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ মে সকালে সদর উপজেলার দিয়াড় ধাইনগর গ্রামের লক্ষণ ঘোষের মেয়ে স্থানীয় মহিপুর এসএএম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী কণিকা রানী ঘোষ তার তিন বান্ধবী তারিন আফরোজ, তানজিমা আক্তার ও মরিয়ম আক্তারকে নিয়ে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। পথে মহিপুর ডিগ্রি কলেজের পেছনের সড়কে আবদুল মালেক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই চার ছাত্রীকে কোপাতে থাকে। মালেকের হাসুয়ার আঘাতে কণিকাসহ তার তিন বান্ধবী তারিন, মরিয়ম ও তানজিমা গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কণিকা রানী ঘোষকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার দিনই নিহত কণিকার মা অঞ্জনা রানী ঘোষ বাদী হয়ে মালেকের বিরদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে একই বছরের ৭ অক্টোবর আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মাত্র ১৫ কার্যদিবসে ২১ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি আসামির উপস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়াউর রহমান রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত কণিকাকে হত্যার দায়ে আবদুল মালেককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর তিন ছাত্রীকে হামলার জন্য ৩২৪ ধারায় ১০ বছর, ৩২৬ ধারায় ১৪ বছর এবং ৩০৭ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৫ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে আসামি জেল আপিল করেন। আজ মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ ও আসামির আপিল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল মালেক চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের বালুগাঁ দিয়াড় গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস