Wednesday 27 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এনবিআর প্রথম সচিব মো. নেয়ামুল ইসলামের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:২৬

ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব ড. মো. নেয়ামুল ইসলামের নতুন বই ‘দ্যা আন্ডারস্ট্যান্ডিং অব ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট: রেটোরিক অ্যান্ড রিয়েলিটি অব সাফটা’র মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডে তথ্য ভবন অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিপিডির সম্মানীয় রিসার্চ ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ আলী আহমেদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দীন।

বিজ্ঞাপন

বইটি সম্পর্কে লেখক ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম বলেন, সাফটা কী ম্যান্ডেট নিয়ে শুরু হয়েছিল, কী হবে—সে বিষয়গুলো বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। বাণিজ্য সহজীকরণ, গ্যাট এগ্রিমেন্টের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। পলিসি মেকার, রিসার্চারদের কাজে লাগবে বইটি।

বই সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বইটির প্রতিপাদ্যের দুইটি দিক রয়েছে। এর একটি হলো, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অপরটি হলো আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক আইন। আইন ও বাণিজ্য-এই দুইটি একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ড. নেয়ামুল এর আছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বইটি সাফটা বা সার্ক নিয়ে লিখিত কোনো বই নয়। বইটি মূলত মুক্ত বাণিজ্যের অঙ্গীকারের উপর লেখা। বিশেষভাবে সাফটার বিভিন্ন রেফারেন্স তুলে ধরা হয়েছে। বইটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি ও আলোচনার বিষয়ে বার্তা দেয়।

ঢাবি উপাচার্য আরও বলেন, একজন ভালো স্কলারের কৃতিত্ব হলো অল্প কথায় অনেক কিছু তুলে ধরা। এই বইতে নেয়ামুল অল্প কথায় সব তুলে ধরেছেন। বইটিতে পুরো দক্ষিণ এশিয়াকে একটি ইন্টিগ্রেটেড এনটিটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। সাফটার মধ্যে যে মিসিংগুলো হয়েছে—তা খুঁজে বের করে এই বইতে তুলে ধরা হয়েছে। বইতে সেই মিসিংগুলোর সঙ্গে নাফটার সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুক্ত বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক আইন, অর্থনীতি, গবেষণার কাজে বইটি উপকারে আসবে।

সিপিডির সম্মানীয় রিসার্চ ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৯৯ সালে সার্কের কনফারেন্স থেকে সাফটা আসে। সেখানে একটি রোডম্যাপ করা হয়েছিল। ২০০৬ সালে সাফটা চুক্তি যখন সই হয় তখনকার পরিবেশ ছিল ভিন্ন। সাফটার আলোকে হয়ত আমরা এখন আঞ্চলিক সহযোগিতা দেখতে পারব না। রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি কিন্তু পরিবর্তন হয়ে গেছে। বইটি যদিও সাফটা নিয়ে লেখা। তবে সাফটার আঙ্গিকে বাণিজ্যে যে সমস্যা ও বাধাগুলো উঠে এসেছে তা দূর করতে কাজে লাগবে।

তিনি বলেন, আমাদের আঞ্চলিক বাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশ। যেখানে আসিয়ানভুক্ত দেশে ২৫-৩০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে ৭০ শতাংশ। ভারতের কথা বলতে পারি, যে ভারত এন্ট্রি ডাম্পিং ডিউটি বসায়। কিন্তু আমরা কি আমাদের হোমওয়ার্কগুলো করেছি? ভারত ২০১০ সালে আমাদের প্রথম, ২০১৫ সালে দ্বিতীয়, ২০১৮ সালে তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিট দিয়েছে। কিন্তু আমরা তো ২০১০ সালের প্রথম লাইন অব ক্রেডিট বাস্তবায়ন করতে পারিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, প্রচুর তথ্য বইটিতে কম্পাইল করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলা। এই নিয়ে গভীর বিতর্ক আছে যে, এই ধরনের আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মুক্ত বাণিজ্য প্রসার হবে। প্রয়োজনীয়তার জায়গা থেকে যখন দক্ষিণ এশিয়ার দিকে তাকাই, তখন দেখি যে এখানে আঞ্চলিক সহযোগিতার পরিমাণ খুব কম। তবে আঞ্চলিক বাণিজ্য বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক বাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশ। অথচ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ২৫ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য ৬০ শতাংশ। বিশ্ব বাণিজ্যের তথ্যানুযায়ী, দ্রুত প্রবৃদ্ধিশালী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। পাশাপাশি বলা হয় যে, সবচেয়ে কম আঞ্চলিক সহযোগিতার দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, পাকিস্তান ইত্যাদি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক রফতানিকারক অভিযোগ করেন, ভারতের বাজারে রফতানি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। রফতানিতে শুল্ক না থাকলেও কোয়ালিটি, স্ট্যান্ডার্ড, ক্লিয়ারেন্সসহ বিভিন্ন কারণে রফতানি আটকে যায়। ভারত এন্ট্রি ডাম্পিং শুল্ক বসায়। এগুলোর সমাধানের বিষয়ে সাফটায় বলা হয়েছে, যা কখনো ব্যবহার হয় না। কারণ যখন সাফটার ব্যবহার নেই, তখন সমাধানের বিষয় কেন সামনে আসবে। আঞ্চলিক সহযোগিতা তখনই ফলপ্রসূ হবে, যখন আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ হোমওয়ার্কগুলো করব।

স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) বইটি প্রকাশ করেছে।

সারাবাংলা/আইই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর