Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জনগণকে প্রতিপক্ষ বানালে পরিণত শুভ হবে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:০০

ঢাকা: ‘জনগণকে প্রতিপক্ষ বানালে পরিণতি শুভ হবে না’ বলে প্রশাসনের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় পলওয়েল কনভেনশন সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ভোলায় নুরে আলম ও আব্দুর রহিম এবং নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান নিহত হওয়ার ঘটনায় ঢাকা মহানগর উত্তর পূর্ব জোন বিএনপি এ সমাবেশ আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, জনগণকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। জনগণ থেকেই আপনারা এসেছেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আপনাদের বেতন হয়, সংসার চলে। সুতরাং জনগণকে সন্মান করুন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না। কথায় কথায় গুলি করবেন না। ওই যেমন আজকে র‌্যাবের ওপরে স্যানশন (নিষেধাজ্ঞা) এসেছে। ঠিক তেমনি যেকোনো বাহিনীর ওপরেও স্যানশন আসতে পারে, যদি না আইন না মেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে থাকেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল-ডাল-লবণ-তেলের মূল্য কমানো আন্দোলন করছি, পেট্রোল-ডিজেল-কেরোসিনের মূল্য কমানোর জন্য আন্দোলন করছি, সারের দাম কমানোর জন্য আন্দোলন করছি, আমাদের ভাই ভোলায় নূরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়নগঞ্জের শওকত প্রধানকে হত্যা করা হয়েছে। সেইসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য আমরা আন্দোলন করছি। দেশের মানুষ গর্জে উঠেছে। নূরে আলমরা প্রাণ দিতে দ্বিধা করে নাই। আজকে আমি ঘোষণা করতে চাই, আমরা কেউ প্রাণ দিতে দ্বিধা করব না।’

বিজ্ঞাপন

‘আমাদের দাবি একটাই, এই দেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিতে হবে, আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে চাই, ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চাই, আমরা আমাদের বাঁচার অধিকার ফিরে চাই, আমরা শান্তিতে বাস করতে চাই। আমরা একটা মুক্ত সমাজে বাস করতে চাই, একটা সমৃদ্ধ দেশে বাস করতে চাই। আমরা এই চোর-ডাকাত আওয়ামী লীগের হাত থেকে মুক্তি চাই’- বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘এই আপনাদের সামনে যে এ্যালিভেটেড রাস্তা, যার নির্মাণ কাজ ১০ বছর ধরে চলছে। আপনারা চিন্তা করতে পারেন। ১০ বছর ধরে এই রাস্তায় কাজ চলছে, ক্রেইনে মানুষ মেরে ফেলছে। তারপরও তার কাজ শেষ হয় না। কারণ কী? কারণ একটাই। এই যে রাস্তাটা তা নির্মাণে প্রতি কিলোমিটার খরচ হচ্ছে ২১৩ কোটি টাকা। পৃথিবীর কোনো দেশে প্রতি কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে এত খরচ হয় না। এভাবে তারা সারাদেশে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করছে। বাংলাদেশের মানুষকে তারা না খাইয়ে রাখছে, শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে নেমে গেছে।’

নতুন ইসি ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়- সাফ জানিয়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ব্যর্থ সরকারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশনের অধিনে কোনো নির্বাচন হবে না। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার একে একে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধবংস করেছে। পার্লামেন্ট একটা আছে- এই পার্লামেন্ট এখন একটা রাবার স্ট্যাম্প পার্লামেন্ট। এটাকে আমরা বলি গৃহপালিত পার্লামেন্ট। এখানে কোনো বিরোধীদল কাজ করে না, এখানে দেশের মানুষের সমস্যা নিয়ে আলাপ হয় না। জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, তেলের দাম বাড়ে, করোনার চিকিৎসা- এসব নিয়ে এই পার্লামেন্টে আলোচনা হয় না। আলোচনা হয় কি? তোষামোদি, একজনের তোষামোদি, এক ব্যক্তির তোষামোদি হয়।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে। তাকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে- এটা কোনো মামলাই নয়। ২ কোটির মামলা- সেই টাকা এখন ব্যাংকে বেড়ে ৮ কোটি টাকা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে সব ডাক্তার বলেছেন। কিন্তু এরা তাকে বাইরে চিকিৎসা করতে দিতে চায় না। কারণ, দেশনেত্রীকে তারা ভয় পায়। যদি উনি আবার বেরিয়ে আসেন, আবার রাজপথে নামেন তাহলে হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো লাখ লাখ মানুষ নামবে। তখন তাদের তখতে তাউস উড়ে চলে যাবে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, মহানগর দক্ষিণে রফিকুল আলম মজনু, তাবিথ আউয়াল, এস এম জাহাঙ্গীর, কফিল উদ্দিন, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াছিন আলী, মহিলা দলের নায়েবা ইউসুফ, শ্রমিক দলের মুস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের রাসেল বাবু প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর