সলিমপুরে পুলিশের ওপর হামলার ৯ আসামি গ্রেফতার
১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:২২
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরের বাসিন্দাসহ ৯ জনকে নগরী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়া প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সীতাকুণ্ড ও কোতোয়ালী থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। এসময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম ছিলেন।
গ্রেফতার ৯ জন হল- বায়েজিদ বোস্তামি থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. হাবিব, তৌহিদুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, আলীনগরের বাসিন্দা মো. রাজু, আখতার হোসাইন, আশীষ বিশ্বাস, সাদেক হোসেন, মো.মুন্না এবং মো. শামসু।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘সীতাকুণ্ড থানার আলীনগর এলাকায় প্রশাসনের চলমান উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেয়ার মামলার ৯ আসামিকে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর তাদের সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আলীনগরের বাসিন্দাদের সংঘবদ্ধ করে চলমান উচ্ছেদ অভিযান ঠেকানোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ৭৭ জনের একটি চক্রকে শনাক্ত করা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে একটি বিশেষ গ্রুপের মাধ্যমে তারা পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আসছিল। গ্রেফতার হওয়া আখতার হোসাইনের মোবাইল জব্দ করে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে সরকার ও প্রশাসন বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
এর আগে, শনিবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের বাইপাস এলাকায় দু’টি বাসে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ৬১ জনকে গ্রেফতার করে, যাদের সবাই একই হামলার মামলার আসামি। সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরে ‘অবৈধভাব বসবাসকারীদের’ উচ্ছেদ ঠেকাতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার খবর পেয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা জঙ্গল সলিমপুর পাহাড়ে ৫টি মৌজায় প্রায় ৩১০০ একর সরকারি খাসজমি আছে। ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন সেই খাসজমি দখল করে প্রায় তিন দশক ধরে সেখানে পাহাড় কেটে ও জঙ্গল সাফ করে প্লট বিক্রি করে আসছিল। নিম্ন আয়ের লোকজন সেই প্লট কিনে সেখানে বসতি ও দোকানপাট গড়ে তোলে, যার মধ্যে মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাও আছে। জেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও সেখান থেকে তাদের সরাতে পারেনি। সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী ওই এলাকায় প্রায় ১৯ হাজার মানুষ বসবাস করে।
বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সলিমপুর থেকে অবৈধ বসতি ও স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে সরকারী খাসজমিগুলো উদ্ধার করে সেখানে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। জুলাই মাস থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১২ সেপ্টেম্বর উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এতে সভাপতিত্ব করবেন।
সারাবাংলা/আরডি/একে