ভাগ্য বদলের স্বপ্নে বিনা খরচে জাপান যাচ্ছেন ১৪ তরুণ
২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:৩৫
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: ‘এইচএসসি পাসের পর অনেকটা বেকারই ছিলাম। পরে খোঁজ পেয়ে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সহায়তায় আইএম জাপান প্রকল্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। উত্তীর্ণ হওয়ায় টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য জাপান যাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। খুব ভালো একটা সুযোগ পেয়েছি। এবার পরিবারের জন্য কিছু একটা করতে পারবো।’
কথাগুলো বলছিলেন ভোলা সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের চরপোটকা গ্রামের বাসিন্দা মো. আতিকুর রহমান। শুধু আতিকুরই নয়, সরকারি খরচে জাপান যাওয়ার এই সুযোগ পেয়ে আরও ১৩ ইন্টার্ন উচ্ছ্বসিত। এখন তারা ভাগ্য বদলের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার অপেক্ষায়।
বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সরকারিভাবে একটি ফ্ল্যাইটে তাদের জাপান নিয়ে যাওয়া হবে। সে উপলক্ষে সার্টিফিকেট তুলে দিতে বুধবার এক বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সেখানেই এসব কথা বলছিলেন আতিকুর।
সারাবাংলাকে আতিকুর বলেন, ‘একটি প্রাইভেট কোম্পানির অ্যাম্বুলেন্স চালাতাম। মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হতো। কোনও রকম চলে যেতো। তবে জাপানে বেতন হবে ৯০ হাজার টাকা। থাকা খাওয়ার পরও ৬০ হাজার টাকা থাকবে। এতে পরিবারের জন্য কিছু একটা করতে পারবো।’
জাপানে যাওয়া প্রশিক্ষণার্থীদের পক্ষে অনুষ্ঠানে কথা বলেন মো. ওবায়দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘জাপানে আমরা যারা যাচ্ছি তাদের অনেকেই হতদরিদ্র। আমাদের মতো হতদরিদ্রকে বিনা পয়সায় জাপানে পাঠানো সরকারের বিশাল কৃতিত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন জাপানি ভাষায় লিখতে পারি, বলতে পারি ও বুঝতে পারি। জাপানি প্রতিনিধিরা আমাদের পারফরমেন্সে খুবই খুশি হয়েছেন।’
নতুন আরেকটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া আনু আক্তার বলেন, ‘প্রশিক্ষণ শেষ করে আমরাও যেন দ্রুত জাপান যেতে পারি, সেই প্রত্যাশা রাখছি। অনুষ্ঠানে শফি উদ্দিন নামের একজন অভিভাবক দুই দেশের সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, জাপান আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। বিএমইটির মাধ্যমে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠানোও অব্যাহত থাকবে। বিনা খরচে জাপানে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে ইন্টার্নরা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, বিএমইটির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে আমি ঢাকার বাইরে ছড়িয়ে দিয়েছি। ঢাকা কেন্দ্রিক রাখিনি। তাদের যেন বাড়তি শ্রম ব্যয় না হয়। দেশের সবাই যেন সমান সুযোগ পায়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জাপান দূতাবাস, আইএম জাপান নামের প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আইএম (ইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন) জাপান এর সহায়তায় বিএমইটি’র মাধ্যমে জাপানে টেকনিক্যাল ইর্ন্টান পাঠানো হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ১৭ জন টেকনিক্যাল ইর্ন্টান পাঠানো হয়। আর দ্বিতীয় ধাপে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ১৪ জন টেকনিক্যালকে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে নতুন করে শুরু হচ্ছে আরেকটি ব্যাচের প্রশিক্ষণ।
সারবাংলা/ইএইচটি/টিএম/এমআইএস
* দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook