Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:১৬

ঢাকা: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসে বিদেশিরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন বলে মন্তব্য করেছেন সংসদীয় কমিটির একাধিক সদস্য। এ কারণে তারা বিনিয়োগ না করে ফিরে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন কমিটির সদস্যরা।

ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ, কে, আব্দুল মোমেন বলেছেন, অনেক কষ্ট করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা বলে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। তবে তারা বিভিন্ন সংস্থা ও দফতরে গিয়ে হয়রানি শিকার হয়ে ফিরে যাচ্ছেন এবং অন্যদেরও বাংলাদেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। এ ছাড়া অনেক প্রবাসী বাঙালি দেশে বিনিয়োগ করতে চাইলেও তাদের জমি দখল, বাড়ি দখল থেকে শুরু করে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। ফলে তারাও দেশে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩০তম বৈঠকে কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা যায়। এর আগের বৈঠকে মন্ত্রীসহ অন্যান্য সদস্যরা এ কথা বলেন।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর বিশ্বে ১৬৮তম স্থানে অবস্থান করছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই প্রতিবন্ধকতাগুলো এখন মারাত্মক আকার ধারণ করছে।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে দেশে কোনো বিনিয়োগ হবে না বলে মন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের কোনো পরিবেশ নেই। বিনিয়োগ করতে গেলে বিভিন্ন সেক্টরে ধরনা দিতে হয়। বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই এখানে বিনিয়োগ না করে বাধ্য হয়ে তাদের দেশে ফিরে যাচ্ছেন।’

কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘দেশে প্রচুর বিনিয়োগের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বিনিয়োগের লক্ষ্যে সরকার ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোগগুলো ব্যর্থতায় পর্যবর্ষিত হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া বাংলাদেশ বিরোধী নেতিবাচক প্রচারণা মোকাবিলার পাশাপাশি ইতিবাচক প্রচারণায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্মানী দিয়ে কলাম (Article) লেখানোর ব্যবস্থা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ভালো কলামিস্টও খুঁজছে তারা। ভালো কলামিস্টদের সন্ধান থাকলে তা মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য সংসদীয় কমিটির সদস্যদের কাছে আহ্বানও জানিয়েছে।

এ ছাড়া নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধ ও ইতিবাচক প্রচারণা জন্য মন্ত্রণালয় নতুন একটি শাখাও খুলছে। মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের আওতায় ‘অভিবাসী কূটনীতি’ নামে একটি অধিশাখা সৃষ্টির জন্য সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে প্রবাসী/অভিবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণায় লিপ্ত হন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য মিডিয়ায় তাদের সরব উপস্থিতি ও দেশ বিরোধী আপত্তিকর মন্তব্য, বক্তব্য ও প্রচারের জন্য বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে বলা হয়- স্বাগতিক দেশের নানাবিধ আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অনেক ক্ষেত্রে দুরূহ হয়ে পড়ে।

প্রতিবেদনে এ ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা তুলে ধরা হয়। পাশাপশি মন্ত্রণালয়ে নতুন অধিশাখা সৃষ্টির কথাও বলা হয়। বলা হয়- বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো বিশ্ববাসীর কাছে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ বিরোধী নেতিবাচক প্রচার-প্রচারণা মোকাবিলার জন্য স্থায়ী কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগে ‘অভিবাসী কূটনীতি’ নামে একটি অধিশাখা সৃষ্টি করে একজন পরিচালকসহ ২ জন সহকারী সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা পদায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অধিশাখা সৃজন করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগসহ অন্যান্য অংশীজনের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ বিনিয়োগকারী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর