Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গণপরিবহনে প্রতিদিন বাড়তি ভাড়া যাচ্ছে ১৮২ কোটি টাকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:৪৩

ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণির গণপরিবহন যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৮২ কোটি ৪২ লাখ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ সব ভাড়া আদায় করতে পরিবহনগুলোকে সাড়ে ৩ কোটি ট্রিপ দিতে হচ্ছে। এ তথ্য দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংস্থাটি আরও বলছে, গত ১ বছরে দুইবার জ্বালানির তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয় গণপরিবহন ভাড়া। এতে অস্থির হয়ে ওঠে গণপরিবহন খাত। বর্তমানে নগরীর কোনো পরিবহনে সরকার নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর নেই।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে ‘অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসকল তথ্য তুলে ধরা হয়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করায় তর্কের জেরে গণপরিবহগুলোতে ২৫টি যাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। এতে বাস থেকে ফেলে ১৪ যাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে ১০ জন যাত্রী। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত ২০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণির গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ করে।

পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, জাইকার সমীক্ষানুযায়ী রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন শ্রেণির গণপরিবহনে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হয়। গত এক বছরে দুই দফা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পরে গণপরিবহনে অস্বাভাবিক হারে ভাড়া নৈরাজ্য শুরু হয়। সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে চেষ্টা করেও এই ভাড়া নৈরাজ্য থামাতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। কোন কোন পরিবহনে দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষণকালে বিভিন্ন যানবাহনের চালক, সহকারী ও ভাড়া আদায়কারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালিকের দৈনিক জমা, জ্বালানী উচ্চ মূল্য, সড়কের চাঁদাবাজি, গাড়ির মেরামত খরচ ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তারা ভাড়া নৈরাজ্য চালাতে বাধ্য হচ্ছে।

পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, রাজধানীতে যাত্রী সাধারণের যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রতিদিন গড়ে ১৮২ কোটি ৪২ লাখ টাকার বেশি অতিরিক্ত ভাড়ার নামে আদায় করছে বিভিন্ন শ্রেণির গণপরিবহনগুলো।

বাড়তি ভাড়া আদায় ও নৈরাজ্য বন্ধে ১০টি দাবি জানিয়েছে সমিতি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নগদ লেনদেনের পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায়, অভিজ্ঞ ও বুয়েটের কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে ভাড়া নির্ধারণ, বাসের ভেতরে দৃশ্যমান স্থানে ডিজিটাল ব্যানারে ভাড়া চার্ট প্রদর্শন, সিটিং সার্ভিস-গেটলক সার্ভিস বন্ধ এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে একক মালিকানাধীন বাসে ২০ হাজার এবং কোম্পানির বাসে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।

এ সময় বিশিষ্ট সাংবাদিক মাসুদ কামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, অ্যাসোসিয়েশন অব বাস কোম্পানী’স এর সভাপতি রফিকুল হোসেন কাজল, এসএমই ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী জামান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্ঠা ও বিশিষ্ট অপরাধ বিজ্ঞানী মোজাহেরুল হক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ খোকন, যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল, বাংলাদেশ মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মনজুর হোসেন ঈসা, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআর/ইএইচটি/একে

গণপরিবহন টপ নিউজ বাস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর