Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বগুড়ায় বেড়েছে হত্যাকাণ্ড, ৮ মাসে ৬৪ খুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৪৮

প্রতীকী ছবি

বগুড়া: জেলায় বেড়েই চলছে খুনের ঘটনা। প্রতি ৩ দিনে ঘটছে একটি হত্যাকাণ্ড। পূর্ব শত্রুতা ও তুচ্ছ ঘটনায় এসব হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে ধারাল অস্ত্র। পুলিশের সূত্র মতে, গত আট মাসে জেলায় মোট ৬৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে আগস্টে খুন হয়েছে ১০ জন। এসব হত্যাকাণ্ডে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে বার্মিজ চাকু। হত্যাকাণ্ড রোধে পুলিশের পক্ষ থেকে নিবারণমূলক ও সচেতনমুখী নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে বিট পুলিশিং তৎপরতা। তারপরেও হত্যাকাণ্ডের গ্রাফ নিম্মমুখী হচ্ছে না। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাদক বিক্রেতাদের সংখ্যাও।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমন তথ্য উঠে আসে। পুলিশ সূত্র বলছে, গত কয়েক মাস ধরে বগুড়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে। বেশির ভাগই ঘটছে পূর্ব শত্রুতার জেরে। তুচ্ছ ঘটনায় বার্মিজ ছুরি নিয়ে হামলা হত্যাকাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এছাড়া ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ভ্যানের ব্যাটারি ছিনতাই করতে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে চালককে হত্যা করে ব্যাটারি ছিনতাই হচ্ছে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই আবার ঘটছে শ্বাসরোধ করে। পাবিারিক ও জমি সংত্রান্ত বিরোধেও হত্যাকাণ্ড ঘটছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ সুত্র আরও জানায়, বগুড়ায় মোট মাদক বিক্রেতাদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬০০। তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতারের সংখ্যা প্রায় ৪১২। তবে এর বাইরে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, র‌্যাব ও আমর্ড ব্যাটালিয়ন পুলিশের অভিযানেও বিপুল মাদক উদ্ধার হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত জেলার থানা এলাকাগুলোতে ঘটা ৬৪টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে বার্মিজ চাকুসহ ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুন হয়েছে ২৪টি, শ্বাসরোধ করে হত্যা ১৪টি দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি, রড, কোদাল দিয়ে হত্যা হয়েছে ১৩টি এবং অন্যভাবে হত্যা হয়েছে ১১টি। শ্বাসরোধ করে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে তার বেশির ভাগই আবার ঘটছে রিকশা ও ভ্যানের ব্যাটারি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে। অপর দিকে বার্মিজ চাকুর ব্যবহার বাড়ার জন্য এর সহজ প্রাপ্যতাকে দায়ী করছে পুলিশ। কিশোর অপরাধীরা ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য্যের এসব চাকু অনলাইন থেকে কিনছে। গৃহস্থালি ব্যবহারের কথা বলে অনেকে এসব চাকু অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করছেন।

হত্যাকাণ্ড ও মাদক বিক্রেতাদের তৎপরতার বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার জানান, হত্যাকাণ্ড রোধে বিট পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদার ও সার্বিক মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। ওপেন হাউস ও সচেতনতামুলক অন্যান্য ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ব্যবস্থাযোগ্য জিডির ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষসহ পারিবারিক দ্বন্দ্বের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রতি মাসে খুনের সংখ্যা ৭ এর মধ্যে থাকলেও গত আগাস্টে খুনের সংখ্যা বেড়ে ১০’এ দাঁড়ায়। আর মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান জোরদার থাকায় গত ৮ মাসে বিপুল সংখ্যক মাদক উদ্ধার, ১ হাজার ৭০০টির বেশি মামলা এবং এর বিপরীতে ২ হাজার ৩৯১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে ১ টন ৭৫ কেজি গাঁজা, ৭ হাজার ৪০০ বোতল ফেন্সিডিল, প্রায় ৪৫ হাজার পিস ইয়াবা, ১৭ হাজার পিস টাপেন্টডাল ট্যবলেটসহ বিপুল পরিমাণ অন্যান্য মাদক রয়েছে।

বার্মিজ চাকুর সহজ প্রাপ্যতার বিষয়ে পুলিশ সুপার আরও জানান, অনলাইনে বার্মিজ চাকু কেনার বিষয়ে সাইবার পুলিশ টিমের মাধ্যমে মনিটরিং করছেন। তবে পুলিশি ব্যবস্থার সঙ্গে অপরাধ নির্মূলে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা এবং সমাজের সকলের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়ালে কিশোর অপরাধসহ হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাও হ্রাস পাবে।

সারাবাংলা/এনএস

বগুড়া হত্যাকাণ্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর