Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্রামীণ রূপান্তরে শক্তিশালী হচ্ছে অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৩২

ঢাকা: গ্রামীণ রূপান্তরে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। তবে এতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকসহ সব ক্ষেত্রেই নানারকম প্রভাব পড়ছে। যেমন- কৃষির ক্ষেত্রে বংশ পরম্পরায় মানুষের অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে। চীনে এরকমটা হয়েছিল। তবে কৃষিতে ব্যপক যান্ত্রিকীকরণের ফলে উৎপাদন বেড়েছে অনেক। আগে যে জমি এক ফসলি ছিল সেটি এখন তিন বা চার ফসলি হয়ে গেছে। ফলে শক্তিশালী হয়েছে কৃষি ব্যবস্থা। সেইসঙ্গে বড় বড় ফার্ম বা কোম্পানি কৃষির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। তবে গ্রামীণ সামাজিক পরিবেশ প্রায় ভেঙে গেছে। যেমন- স্কুল, মসজিদ, মাদরাসাসহ যেকোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠানই রাজনীতিকীকরণ করা হয়েছে। ফলে দলাদলি, মারামারি দখল সবই হচ্ছে। গ্রামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচার থাকলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যে হচ্ছে সেটিই বড় বিষয়। কিন্তু এ প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সেমিনারে এসব কথা বলা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে ‘এগ্রেইন ট্রানজিশন অর রুরাল ট্রান্সফরমেশন: ফ্যাক্টর অ্যান্ড ট্রেন্ড অব চেঞ্জ ইন ভিলেজ বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআ্ইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনের সোয়াস ইউনির্ভাসিটির প্রফেশনাল রিসার্স অ্যাসোসিয়েটস স্বপন আদনান।

বিজ্ঞাপন

স্বপন আদনান বলেন, ‘গ্রামীণ এই রূপান্তরের পেছনে রয়েছে প্রধানত চারটি কারণ। এগুলো হলো- শহরায়ন, শিল্পায়ন, বর্হিগমন এবং উন্নয়ন। কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়লেও কৃষির প্রতি অনীহা দেখা দিচ্ছে নতুন প্রজন্মের। সেইসঙ্গে সৎ মানুষের উন্নয়ন ঘটছে কম। যারা একটু দুর্নীতিবাজ বা রাজনৈতিক প্রভাবশালী তাদের উন্নতি হচ্ছে দ্রুত। এসব দেখে সাধারণ মানুষের মনোজগতে চিন্তার পরিবর্তন ঘটছে। যা আগামী প্রজন্মের জন্য মারত্বক চিন্তার কারণ। এছাড়া দুর্নীতি ও রাজনৈতিক শক্তির প্রভাবে সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ অর্থনৈতিক অবস্থার বিকাশ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। রেমিটেন্স এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এই অর্থ উৎপাদনশীল কাজে কতটা ব্যয় হয়ে থাকে সেটি প্রশ্ন সাপেক্ষ। গ্রামে আগের সেই প্রথাভিত্তিক অনুশাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেক্ষেত্রে এখন থানার ওসি, রাজনৈতিক নেতা বা ছাত্র নেতারা দখল করে নিয়েছে। দুর্নীতি, পেশী শক্তি বা রাজনৈতিক প্রভাব খারাপ প্রভাব ফেলছে। নেতারা মনে করেন, তাদের লোক কেন শাস্তি পাবে? এই মনোভাব সামাজিক ন্যয় বিচারের ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ জমি চলে যাচ্ছে বিত্তশালী বা শিল্প মালিকদের হাতে। তারা চিংড়ি ঘের, রাবার বাগান কিংবা অন্য কোনো অর্থনৈতিক কাজে ব্যবহার করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করছে। গ্রামে মধ্যস্বত্বভোগী বা সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা ব্যাংক ঋণ থেকে শুরু করে পণ্য পরিবহনেও হস্তক্ষেপ করে। যেমন একটি ট্রাক চট্টগ্রাম বা দিনাজপুর থেকে ঢাকায় আসতে অনেক স্থানে চাঁদাবাজির শিকার হয়।’

স্বপন আদনান, ‘গ্রামের মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের শক্তি আছে। যেমন যশোর-খুলনার বিল ডাকাতিয়ায় অপরিকল্পিত বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। অনেক অর্থ ব্যয়ে এজন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও সেটি কোনো কাজে আসছিল না। এটি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড বা উন্নয়ন সহযোগী কোনো পক্ষই ব্যবস্থা নিচ্ছিল না। তখন গ্রামের মানুষ এটাকে কাজে লাগানোর বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছিল। এটাকে বলে লোকজ জ্ঞান। এর একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে।’

সারাবংলা/জেজে/পিটিএম

অর্থনীতি গ্রামীণ রূপান্তর শক্তিশালী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর