শিক্ষার্থীদের জন্য ‘নিরাপদ চবি ক্যাম্পাস’ চান আদালত
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৩৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীর অবাধ বিচরণের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য প্রক্টরিয়াল বডিকে পরামর্শ দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে সম্প্রতি এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর আপত্তিকর ভিডিও ধারণের মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সবধরনের সহযোগিতা দেওয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। আর তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আপত্তিকর ভিডিওগুলো যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া এসব আদেশ দিয়েছেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর ওই মামলার আসামি নুর হোসেন শাওনের জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় জেলা জজ প্রক্টরিয়াল বডি’র সকল সদস্যকে আদালতে তলব করেছিলেন।
আদালতের নির্দেশনা মেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াসহ প্রক্টরিয়াল বডি’র সদস্যরা আদালতে হাজির হন। উপস্থিত ছিলেন আক্রান্ত ছাত্রী এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালত দু’টি নির্দেশনা ও একটি পরামর্শ দিয়েছেন। প্রক্টরিয়াল বডিকে মামলার আইওকে তদন্তকাজে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সকল ছাত্রছাত্রীর উন্মুক্ত ও অবাধ বিচরণের পরিবেশ যাতে বজায় থাকে, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যে আপত্তিকর ভিডিও আসামিরা ধারণ করেছিল, সেটা যাতে কোনোভাবে ছড়িয়ে না পড়ে সেই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
এদিকে, বুধবার আসামি নুর হোসেন শাওনের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন বলে জানান পিপি সাইমুল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী গত ১৭ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন যুবক ছাত্রীর সঙ্গে থাকা তার বন্ধুকে আটকে রেখে তাকে যৌন নিপীড়নের পর বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনায় ২০ জুলাই ওই ছাত্রী বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন।
ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। এ ঘটনায় র্যাব মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার পাঁচজন হলো- মো. আজিম (২৩), নুর হোসেন শাওন (২২), নুরুল আবছার বাবু (২২), মাসুদ রানা (২২) এবং মো. সাইফুল (২৩)।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, আজিম ঘটনার মূল নেতৃত্বদাতা এবং চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী। আজিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ও নুরুল আবছার বাবু নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। নুর হোসেন শাওন হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান প্রথম বর্ষ ও মাসুদ একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সাইফুল পড়ালেখা করে না।
আজিমের বাবা আমির হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কর্মচারী। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্টাফ কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। বাকি চারজনের বাবাও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মচারী এবং ক্যাম্পাসে পরিবার নিয়ে থাকেন।
গ্রেফতারের পর আজিম ও বাবুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম