Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এইচএসসির সনদে বানান ভুল, আর্থিক ক্ষতির মুখে শিক্ষাবোর্ড

তহীদ মনি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:২৫

যশোর: ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করা পরীক্ষার্থীদের সনদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। সনদে ‘হায়ার’ বানান ভুল হওয়া এ সমস্যা হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার সনদে এই ভুল হয়েছে। পরে আলোচনার করে নতুন সনদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড। এতে পরীক্ষার্থীদের সনদ পেতে যেমন দেরি হবে, তেমনি কয়েক লাখ টাকা গচ্চা যাবে বোর্ডের। তবে বোর্ড চেয়ারম্যান দাবি, ক্ষতির দায় বোর্ড নেবে না। যার বা যাদের দায়িত্ব অবহেলায় এই ভুল হয়েছে, দায়টা তাদের ওপর বর্তাবে।

বিজ্ঞাপন

বোর্ড সূত্র মতে, বর্তমানে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার সনদের কাগজ কেনা হয় সাধারণত অস্ট্রেলিয়া থেকে। কোটেশনের মাধ্যমে কাগজ কেনার পর সরকার নিয়ন্ত্রিত সিকিউরিরটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে তার মনোগ্রামসহ হেড লাইন ছাপা হয়ে বোর্ডে আসে। শিক্ষা বোর্ড মনোগ্রামের নিচে বড় অক্ষরে পরীক্ষার সালসহ নাম লেখা হয়। এরপর সেখানে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা-মাতার নাম, কেন্দ্রের নাম-নম্বর, স্কুল/কলেজের নাম, প্রাপ্ত জিপিএসহ পরীক্ষার নাম এবং ফলপ্রকাশের তারিখসহ অন্যান্য বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়। এসব লেখার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বিভাগসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা নমুনা প্রিন্ট করে তার ভুল-ভ্রান্তি পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এরপর চূড়ান্ত হলে তারপর সনদগুলো প্রিন্ট করা হয়। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করা পরীক্ষার্থীদের সনদের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এরপরও রোল নস্বরের পর যেখানে পরীক্ষার নাম লেখা হয়েছে সেখানে ‘হায়ার’ শব্দটি ভুল বানানে লেখা থাকা অবস্থায় প্রিন্ট হয়ে যায়। এটি আর কারও চোখে না পড়ায় সনদের প্রিন্ট হওয়ার পর বোর্ডে আরও কয়েকটি পর্যায় অনুসরণ করে তাতে সই করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। এই পর্বগুলোর মধ্যে রয়েছে— বোর্ড কর্মচারীদের গ্রুপ বিভাজনের মাধ্যমে, ‘কমপেয়ার্ড’কারীর সই ও ‘চেক’কারীর সই। এ সময় মূল ফলাফলের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে তারা সই করেন। একইসঙ্গে প্রতিটি সনদের জন্যে ফাইল নোট রাখা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ পরিবহনও যুক্ত থাকে। প্রতিটি পর্বের কাজের জন্য নির্দিষ্ট হারে সম্মানীও রয়েছে। এক কথায় একটি সার্টিফিকেট বহু হাত ঘুরে পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ শেষে সনদ গ্রহণকারীর কাছে যায়। ১৯৬৩ সালে বোর্ড চালু হওয়ার পর থেকে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সনদ তৈরি করা হয় বলেও জানিয়েছে বোর্ড সূত্র।

কিন্তু এরপরও ২০২১ সালের এইসএসসি পরীক্ষায় পাস করা পরীক্ষার্থীদের সনদে এ ধরনের ভুল হয়েছে। সাধারণ কর্মচারীদের হাতে চেক-কম্পেয়ার্ড হওয়ার কোনো এক সময় এই ভুলটি নজরে আসে। তবে ভুলটি কীভাবে নজরে আসে এ বিষয়টি কেউ জানাতে চাননি। এখন সব সনদগুলো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরে তার সইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

বোর্ড সূত্র আরও জানায়, ভুলটি নজরে আসার পর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়। সেখানে খতিয়ে দেখা হয় কীভাবে এর থেকে উত্তরণ হয়। এটি প্রস্তুাব ছিল ভুল বানানে হায়ার লেখা স্থান ব্লক করে সঠিক বানান লিখে সেটি সরবরাহ করা। সেভাবে ব্লক করে প্রায় সব সার্টিফিকেট প্রস্তুত হয়েছে। তবে এর মধ্যে বোর্ডে বিভিন্নভাবে স্তর থেকে এ বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না শর্তে একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, কালিযুক্ত সনদ না দেওয়ার পক্ষে বেশিরভাগ কর্মকর্তা তাদের মত দিয়েছেন। এমনকি অনেকেই তাতে সই না করার পক্ষে অবস্থান নেন। ফলে সনদের প্রস্তুতের বিভিন্ন পর্যায় পার হওয়ার পরও এখনো তাতে সই করেননি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মধাব চন্দ্র রুদ্র সনদে ভুল বানানের কথা স্বীকার করে সারাবাংলাকে জানান, যেকোনোভাবে ভুল রয়ে গেছে। এ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে কি না তা সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০২১ সালে পাস করা ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন শিক্ষার্থীর জন্যে এই সনদ তৈরি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বোর্ডে চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবীব সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই ভুলের দায় বোর্ড নেবে না। তদন্ত করা হবে। যাদের কারণে এমনটা হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে এর দায় বহন করতে হবে। বোর্ড কোনো আর্থিক ক্ষতির শিকার হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের ভালো সনদ দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সনদ দিতে কিছুটা দেরি হলেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমনটা করা হবে না।’

সারাবাংলা/এনএস

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সনদে বানান ভুল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

পাকিস্তানে শাকিব খানের ছবি
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৮

সালমান খানের আফসোস
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৩

সম্পর্কিত খবর