বিএনপির ৪ নেতার ‘অভিমান’, কর্মীরা চেয়ার ছোড়াছুড়িতে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:৫২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। নেতাদের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘটনা ঘটেছে। ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর কমিটির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন।
সমাবেশে উপস্থিত দলটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূল মঞ্চ অর্থাৎ নাসিমন ভবনে ওঠার সিঁড়িতে আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঙ্গে জুনিয়র কয়েকজন নেতা উঠে পড়েন। এতে মঞ্চে আর বসার জায়গা ছিল না। সিনিয়র নেতাদের অনেকেই তখন মঞ্চের সামনে দর্শকসারিতে বসতে বাধ্য হন।
সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আযম খানের নেতৃত্বে গঠন করা পাঁচ সদস্যের মূল পুনর্গঠন টিমের দুই সদস্য আব্দুস সাত্তার ও সৈয়দ আজম উদ্দীন মঞ্চে জায়গা পাননি। সেই টিমের অধীনে গঠিত পাঁচটি উপ-টিমের প্রধানদের মধ্যে কাজী বেলাল উদ্দিন, নাজিমুর রহমানও মঞ্চে বসতে পারেননি। চারজনই নগর বিএনপিতে জ্যেষ্ঠ্য নেতা হিসেবে পরিচিত।
সমাবেশ পরিচালনা করছিলেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল ইসলাম। তিনি বক্তব্য রাখার জন্য পর্যায়ক্রমে নাজিমুর রহমান, সৈয়দ আজম, কাজী বেলালের নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু তিনজন বক্তব্য রাখবেন না বলে জানিয়ে দেন। এরপর আব্দুস সাত্তারের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি চেয়ারে বসে থাকলে আবুল হাশেম বক্কর মঞ্চ থেকে নেমে হাত ধরে এক মিনিট বক্তব্য রাখার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে বক্কর আব্দুস সাত্তারকে হাত ধরে টেনে মাইক্রোফোনের সামনে নিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর বিএনপির এক নেতা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাত্তার ভাই বক্তব্য শুরু করবেন, এমন সময় নাজিমুর রহমান, বেলাল ও আজম দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন- সাত্তার ভাই আপনি বক্তব্য রাখতে পারেন না। তখন সাত্তার ভাই নেমে যান। এ নিয়ে নেতাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। পেছনে বসা নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল হয়। তখন হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়েছে। তবে শাহাদাত ভাই ও বক্কর ভাই দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।’
জানতে চাইলে আব্দুস সাত্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রত্যেক মিটিংয়ে জুনিয়ররা গিয়ে মঞ্চে চেয়ার দখল করে ফেলে। আমরা সিনিয়ররা হয় মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি, নয়ত চেয়ারে বসে থাকি। আজ (রোববার) নাজিম, বেলাল, আজম বক্তব্য না রাখার পর আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বক্তব্য দেব না। আমি সেটা বলতেই মাইকের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন কিছুটা হট্টগোল হয়। সমাবেশস্থলের পেছনদিকে কারা চেয়ার ছুঁড়েছে সেটা আমি জানি না। তবে এটা এমন কোনো বড় ঘটনা নয়।’
জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি অফিসের ভেতরে হট্টগোল, চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়েছে। আমরা ভেতরে যাইনি। আমরা অফিসের বাইরে ছিলাম। সেজন্য আমরা জানি না, আসলে কী নিয়ে ঘটনা ঘটেছে।’
সারাবাংলা/আরডি/এনএস