Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন ২২ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:০৪

ঢাকা: জেলা পরিষদ নির্বাচনে সারাদেশে ২২ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য একীভূত করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৈরি করা প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইসি সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১৬২ জন প্রার্থী। প্রার্থিতা যাচাই বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১৪২ জনের মনোনয়নপত্র। অন্যদিকে সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৯৮৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন, এদের মধ্যে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৭৪২ জন। আর সংরক্ষিত সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৭১৫ জন, যাদের মধ্যে বৈধতা পেয়েছেন ৬৭৩ জন। আর চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন ২২ জেলায় ২২ জন। ফলে এই ২২ জন জেলা পরিষদ চেয়াম্যান প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে হচ্ছেন।

এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের নির্ধারিত সময় শেষে চেয়ারম্যান পদে ১৯ জেলায় ১৯ জন প্রার্থী এককভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। রোববার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে আরও তিনটি জেলার কয়েকজনের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় আরও তিন জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। ফলে সারাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে ২২ জেলায় বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। এটি মোট জেলা পরিষদের প্রায় ৩৬ শতাংশ।

এদিকে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদ্রোহী যারা আসছে তারা একই দলের। দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে নেই। তারপর প্রশাসকই আসল, এই অবস্থায় তো চলা যায় না। প্রশাসক আর নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যে কিন্তু অনেক পার্থক্য আছে। মন্ত্রণালয় থেকে বলার পর আমরা নির্বাচন দিলাম। আমাদের কাজ নির্বাচনটা করা। তাই দলীয়ভাবে হচ্ছে না কি হচ্ছে সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। একজন দাঁড়াচ্ছে, আরেকজন দাঁড়াচ্ছেন না। কাজেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াটা বেআইনি নয়। আবার নির্বাচন কেউ অংশ নিতে পারবে না- এমন অবস্থার তৈরি হয়েছে, তা তো নয়। আমরা চাচ্ছি সবাই নির্বাচনে আসুক। কিন্তু কেউ যদি না আসে, কেমন করে তাদের আমরা আনব।’

জানা গেছে, এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছে এমন জেলাগুলো হলো- কুমিল্লা, ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝালকাঠি, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, বরগুনা, বাগেরহাট, ভোলা, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, শরীয়তপুর, সিরাজগঞ্জ ও সিলেট। এসব জেলার চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এছাড়াও নরসিংদী ও নারয়ণগঞ্জে একজন করে সাধারণ সদস্যও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন।

জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারদের। রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধরা আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারবেন। এ প্রক্রিয়া শেষে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা একক প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা শেষে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা পরিষদের (পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা পরিষদ বাদে) ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ইসির তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনো বিরতি ছাড়াই ভোট নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক নিজ জেলায় নির্বাচনি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেবেন।

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ নির্বাচন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর