ঢাকা: পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এজন্য শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ‘পদ্মা নদীর ভাঙন রোধকল্পে নদীতীর সংরক্ষণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫২ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদী তীর সংরক্ষণমূলক কাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৫.৮ কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙন থেকে রক্ষার মাধ্যমে বিদ্যালয়, হাট-বাজার, ব্রিজ, ফসলি ও বাসযোগ্য জমি, বসবাসের বাড়ি-ঘর, ধর্মীয় উপসানালয়, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা এবং প্রকল্প এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সারাবাংলাকে বলেন, ‘নদী ভাঙন আমাদের দেশে একটি বড় সমস্যা। ফলে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। বহু সম্পদ, জমি, রাস্তাঘাট, বাড়ি ঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে নদী ভাঙনরোধের প্রকল্পগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে নদী ভাঙন একটি প্রতিনিয়ত ঘটনা। শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা, কাচিকাঁটা, সখিপুর ও উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে পদ্মা নদীর শাখা প্রবাহিত হয়। নদীটি সর্পিলাকার ও স্রোতস্বিনী হওয়ায় এবং জোয়ার-ভাটার প্রভাবে ভাঙনপ্রবণ। এর দুই পাড়সংলগ্ন এলকা বারবার নদী ভাঙনের সম্মুখীন হচ্ছে, ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
এই এলাকা কয়েক বছর ধরে ভাঙন কবলিত হওয়ায় বাজার, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, ব্রিজ, রাস্তা, নদী ভাঙনের হুমকির মুখে। বর্ষা মৌসুমে নদীর ভাঙনের তীব্রতা ও ভাঙন অত্যাধিক হয়। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ৭ এপ্রিল এ বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলোর অন্যতম হচ্ছে- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান এমটিবিএফ সিলিংয়ের মধ্যে প্রকল্পটি কিভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।
একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিকল্পনা বিভাগ হতে জারি করা ফরমেটে নদী ভাঙনের প্রকৃত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, নকশা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের থ্রেটগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন ডিপিপিতে সংযোজন করতে হবে।
তবে প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত ২৯টি প্যাকেজের মাঝে অধিকাংশ প্যাকেজে পৃথকভাবে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল ভাড়ার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে, যা কোনক্রমেই সম্মত নয়। এজন্য বিষয়টি বাদ দিতে এবং এ ধরনের ত্রুটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) পাঠানোর জন্য যথাযথ ব্যাখ্যা পুনর্গঠিত ডিপিপিতে সংযুক্ত করার কথা বলা হয়।
অন্যদিকে, এসব সুপারিশ প্রতিপালন করা হয়েছে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।