Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ইভিএম কেনা প্রকল্প জাতির সঙ্গে মশকরা ’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:১০

ঢাকা: আরো দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা প্রকল্পকে ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কী রকম মস্তকরা হচ্ছে জাতির সঙ্গে। যেখানে মানুষ নির্বাচন চাচ্ছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, যেখানে ইলেকশন কমিশনকে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল বলেছে যে, আমরা ইভিএম চাই না। সেখানে তারা ( ইসি) এক‘শ পঞ্চাশটি আসনের জন্য আরও ইভিএম মেশিন কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকা চেয়েছে। এ যেন মগের মল্লুক। কারণ, এদেশে তো জবাবদিহি করতে হয় না।”

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে কেবিনেট সেক্রেটারি প্ল্যানিং কমিশনের মিটিংয়ে খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, এখানে যে প্রজেক্ট তৈরি করা হয়, তা চুরির জন্য। কোনো পর্যালোচনা পর্যন্তও করা হয় না। মধ্য রাতে ঋণ চুক্তি করা হয়। এই হচ্ছে সার্বিক অবস্থা।’

‘আসলে তো কোনে সরকার নাই। দেয়ার ইজ নো গর্ভানেন্স। বাংলাদেশকে একটা ভয়াবহ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এই আওয়ামী লীগ। আমরা কোনোদিন কল্পনাও করি নাই, চিন্তুাও করি নাই যে, এই দেশ আমাদেরকে একদিন দেখতে হবে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

পুলিশ তথ্য সংগ্রহের নামে হয়রানি করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার নামে হয়রানি করছে পুলিশ। দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিকে আরও আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে তারা। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের একজনের কাছ থেকে অন্যজনের তথ্য সংগ্রহেও লিপ্ত রয়েছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসমূহের কমিটির তালিকাও তারা সংগ্রহ করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশের এই ধরনের কর্মকাণ্ড সংবিধান, ফৌজদারি কার্যবিধি, পুলিশ আইন বা পুলিশবিধি কিংবা অন্য কোনো আইন দ্বারা কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। এটা একদিকে যেমন নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুন্ন করছে অন্যদিকে তেমনি নাগরিকের আইনি অধিকার ভোগ করা ও তার ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান হয় যা সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

তিনি বলেন, ‘চলমান অবস্থায় এটা প্রতীয়মান হয় যে, পুলিশ বিএনপিসহ ভিন্নমতালম্বীদের দমনের উদ্দেশ্যে তাদের গণহারে শুধু নাম ঠিকানা নয়, তাদের পেশা, সন্তান-সম্পত্তির বিবরণসহ চৌদ্দ গোষ্ঠির যাবতীয় বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে,‍যা দেশের বিরাজমান আতঙ্কের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে। বিএনপি এই অবস্থার অবসান চায়। আমরা পুলিশ কর্তৃপক্ষকে আহবান জানাচ্ছি, এভাবে সাধারণ নাগরিক, রাজনৈতিক কর্মীদের হয়রানি বন্ধ করে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করুন।’

ফখরুল বলেন, ‘এটা তাদের একটা চলমান প্রক্রিয়া ভীতি প্রদর্শনের। যখনই বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা আন্দোলন শুরু করে তখন পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই বিষয়গুলো জানতে চায়। আমার বাসায় আগেও এসছিল, আবার এসেছে। আমি তাদের বলেছি যে, কোনো চিঠি আছে এই যে তথ্য জানতে চান। তখন তারা বলে না স্যার।

তিনি বলেন, ‘এটা করার কোনো সাংবিধানিক ক্ষমতা তাদের নাই। সেখানে তারা শুধু-শুধু মানুষকে হয়রানি করার জন্য, আন্দোলনকে দমন করার জন্য একটা কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে। আমরা এটা নিন্দা জানাচ্ছি এবং এ থেকে বিরত থাকার আহবান জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকালও তিনি বলেছেন, আমরা কী আঙুল মুখে দিয়ে চুষবো। সুতরাং তিনি যে বলছেন হামলা না করবে। এটা প্রতারণা করা। এই কথা হচ্ছে মানুষকে প্রতারণা করা, মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা যে, না আমরা খুব ভালো, আমরা সবাই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সহযোগিতা করছি।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখন আন্দোলন যত বিস্তৃত হচ্ছে, ওদের (পুলিশ) খোঁজ-খবর নেওয়াও এখন বিস্তৃত হচ্ছে। এখন ওয়ার্ড পর্যন্ত, জেলা-উপজেলা পর্যন্ত সব নেতা-কর্মীদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছে তারা। মুশকিলটা হচ্ছে যে, একবার নিলে তো একটা কথা। ভয় দেখানোর জন্য বারবার ওরা তথ্য নিচ্ছে।’

‘ওরা আমরা এলাকা থেকে ফোন করে আমাকে। স্যার আমি ওমুক প্রতিষ্ঠানের-একটু কিছু তথ্য দরকার। কী তথ্য? আপনার বাবার নাম কি, কতদূর লেখা পড়া করছেন, কোথায় লেখাপড়া করছেন, কবে কোথায় চাকরি করছেন, কবে রাজনীতিতে আসলেন, আপনার ভাই-বোন কয়জন তারা কে কি করে ইত্যাদি আরো কত কি? আল্লাহ বাঁচাইছে- যে বিয়ে করছি কৈ- এটা জিজ্ঞাসা করে নাই। অবস্থাটা এই পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে তারা’- বলেন নজরুল ইসলাম খান।

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কুষ্টিয়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৮

সম্পর্কিত খবর