রাস্তায় প্রাচীর, প্রতিবেশীর ছাদ দিয়ে চলাচল অবরুদ্ধ পরিবারের
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৩৯
বগুড়া: শহরের বৃন্দাবন পাড়ায় যাতায়াত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় দুই বছর ধরে একটি পরিবার প্রায় অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। প্রতিদিন তারা বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাশের বাড়ির ছাদে কাঠের পাটাতন ও সিমেন্টের স্লাবের ওপর দিয়ে যাতায়ত করেন। পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানিয়েও দুর্ভোগ ও অবরুদ্ধ পরিবারটির সমস্যার সমাধান হয়নি।
অভিযোগে জানা যায়, পৌর এলাকার দুই নম্বর ওয়ার্ডের বৃন্দাবন উত্তরপাড়ার খোরশেদ আলমের স্ত্রী আইরিন মোস্তারী ক্যামেলি তার দুই সন্তান, স্বামী ও নাতিকে নিয়ে বসবাস করেন। খোরশেদ আলম ১৬ বছর ধরে নিরুদ্দেশ। কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসনেনি। সেই থেকে ক্যামেলি ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন। বিপত্তি বাঁধে ওই জায়গায় বাড়ি নির্মান করার সময়। ২০২০ সালে বাড়ি নির্মাণের প্রথম দিকে প্রতিবেশী শরিক মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে জাকির হোসেন, ফারুক হোসেন ও মিলন হোসেন সঙ্গে সুর্ম্পক থাকায় সমস্যা হয়নি।
ক্যামেলিয়া জানান, তার চাচা শ্বশুর মতিয়ার রহমানের সঙ্গে স্বামী খোরশেদ আলমের বাড়ির রাস্তা নিয়ে একটি লিখিত অঙ্গীকার নামা হয়েছিলে ১৯৯৪ সালে। আর স্বামী নিরুদ্দেশ হওয়ার পর থেকে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। ইতোমধ্যে একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেন। আর টিনের ঘরের স্থলে পাকাবাড়ি করা শুরু করেন তারা। তবে এই নির্মান কাজের মাঝপথেইে ২০২০ সালে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে প্রাচীর তুলে দেন প্রতিবেশি তিন শরিক। এতে তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বাড়ির পিছন অংশে কবরস্থান। উত্তর পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক কোয়ার্টার, সামনের অংশে চলাচলের রাস্তার ওপর প্রাচীর তুলে দেওয়া।
দক্ষিণে প্রতিবেশী খন্দকার মাহবুবুর রহমানের বাড়ি। এখন সেই বাড়ির তৃতীয় তলার ছাদের ওপরে বসানো কাঠের পাঠাতন ও স্লবের ওপর দিয়ে ক্যামেলিয়া, মেয়ে তাছনিম উলফাত, জামাই আমিরুল ইসলাম, মেয়ের শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ আল নুর(৮) ও ক্যামেলিয়ার ছেলে আরাফাত আলম রাদিফের চলাচলের একমাত্র পথ।
শিশু আবদুল্লাহ স্কুলে যান তৃতীয়তলার এই ঝুকিপুর্ণ পাটাতন পার হয়ে অন্যের বাড়ির ভিতর দিয়ে। যার বাড়ির ছাদের ওপর দিয়ে অবরুদ্ধ পরিবারটি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন সেই মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী নিলুফা বেগম জানালেন, মানবিক কারণে তিনি নিজের বাড়ির ভিতর দিয়ে ছাদে ওঠার অনুমতি ও পাটাতন দিয়েছেন। তবে এটির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ক্যামেলির ৫ সদস্যের পরিবারটি অমানবিক ভাবে অবরুদ্ধ অবস্থায় জীবন যাপন করছেন।
এ বিষয়ে পরিবারটি পুলিশ ও এলাকার কাউন্সিলরসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে একাধিকবার শরণাপন্ন হয়েও লাভ হয়নি।
এ ব্যাপারে দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটু জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি জানেন। একাধিকবার সেখানে গিয়েছেন। প্রাচীরের বিষয়টি সত্য। পৌর মেয়র বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তাকে বলেছেন। তিনি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিবেন এবং বিষয়টির সমাধানেরও চেস্টা করছেন।
অপর দিকে ক্যামলিয়ার প্রবিবেশি(চাচাত দেবর) শরিক ফারুক হোসেন জানান, রাস্তা দেওয়ার কোন লিখিত অঙ্গীকার নেই।
এ বিষয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুপার সুদীপ কুমার জানান, বিষয়টি তাদের জানা নেই। পরিবারটি তাদের সঙ্গে যোগাযেগ করলে আইনগত সহায়তা দেও হবে।
সারাবাংলা/ইআ