‘জীবন দেব তবু কৃষিজমিতে বালি ফেলতে দেবো না’
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:২৩
ঢাকা: খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর কৃষিজমি বালু ফেলে ধ্বংস করার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তিন ফসলি এই উর্বর জমিতে মোংলা বন্দরের পশুর নদীর ড্রেজিংয়ের বালু ফেলা হচ্ছে। যেকোন মূল্যে এই বালু ফেলা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয়রা।
কৃষিজমি রক্ষার জন্য আয়োজিত এক জনসভায় ‘বাণীশান্তা কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি’র সমন্বয়ক নেতা হিরন্ময় রায় বলেন, ‘জীবন দিয়ে হলেও আমরা এই কৃষিজমি রক্ষা করব।’
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দাকোপ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ কৃষিজমি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ। আমরা জীবন দেবো তবুও আমাদের কৃষিজমিতে মোংলা বন্দরকে বালি ফেলতে দেবো না।’
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাণীশান্তা বাজারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বাণীশান্তা কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি এই জনসভার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাপা সভাপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘বাণীশান্তার উর্বর কৃষিজমি বালু ফেলে ধ্বংস করা যাবে না। কৃষিজমি ধ্বংস করে কোন উন্নয়ন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই অনুশাসন মোংলা বন্দরকেও মেনে চলতে হবে। বিকল্প জায়গা থাকার পরও কৃষিজমিতে বালু ফেলার গোয়ার্তুমি করা থেকে মোংলা বন্দরকে সরে আসতে হবে।’
জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাপা’র কেন্দ্রঅয় নেতা মো. নূর আলম শেখ, আব্দুল করিম কিম, তোফাজ্জেল সোহেল, বাগেরহাট জেলা বাপা নেতা সৈয়দ মিজানুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ক্রীড়া সংগঠক মোর্তজা রশিদী দারা, বাণীশান্তা কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা সঞ্জিব মন্ডলসহ অনেকে।
জনসভায় প্রধান বক্তা শরীফ জামিল বলেন, ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের নানা ধরনের ভয়ভীতি, হামলা-মামলা ও নির্যাতনের হুমকি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুশাসন উপক্ষা করে বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনকারীদের উপর কোনো ধরনের হামলা-মামলা চালালে সারা বাংলাদেশ তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে।’
জনসভার আগে প্রধান অতিথি বাপা সভাপতি সুলতানা কামাল বাণীশান্তা-ভোজনখালি বিলের আমন ধানের ক্ষেত সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
এর আগে, গত ২২ সেপ্টেম্বর কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লেখেন এক হাজার কৃষক পরিবার।
সারাবাংলা/আরএফ/এমও