চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে একটি সরকারি অফিসে চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের করতে তিনদিন কর্মকর্তাদের থানায় ঘুরতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রথমে সেটিকে ‘তুচ্ছ ঘটনা’ বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর অভিযোগ জমা দিলে তিনি মামলার এজাহার হিসেবে সেটিকে গ্রহণ না করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। তিনদিন পর মামলা নিলেও বিলম্বের জন্য দায় চাপান খোদ ওই সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চুরির পর এমন ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ওই উপজেলায় কর্মরত চিকিৎসকদের মধ্যে।
জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর শাকপুরা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র দুটি ফ্যান, তিনটি লাইট এবং ওজন মাপার জিনিস চুরি হয়। পরদিন সকালে কেন্দ্রে ফাইলপত্র ছড়ানো ছিটানো এবং চুরির ঘটনা জানতে পারেন কেন্দ্রের ইনচার্জ ডা. রাকেশ দে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বোয়ালখালী থানায় যান।
ডা. রাকেশ দে’র অভিযোগ, সকাল ১১টায় থানায় গেলেও ওসি না থাকায় তাদের প্রায় দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। পরে সোয়া ১টার দিকে ওসি এসে অভিযোগ শুনে বলেন, “সরকারি অফিসের দুটো পুরোনো সিলিং ফ্যান, তিনটি লাইট এবং ওজন মাপার মেশিন চুরি ‘সামান্য’ বিষয়। এ বিষয়ে মামলা হয় না। ওসি তাদের চলে যেতে বলেন। এরপরও রাকেশ একটি লিখিত অভিযোগ ওসি’র কাছে জমা দেন। সেটিতে কোনো নম্বর ছাড়া শুধুমাত্র থানার সিল দিয়ে রেখে দেন ডিউটি অফিসার।’
‘মামলা না নেওয়ার বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। তখন সেখান থেকে ওসি সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনদিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর আমার অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলার এজাহারে আমার উল্লিখিত ২২ সেপ্টেম্বরকে ২৫ সেপ্টেম্বর বানিয়ে লেখা হয়েছে- আমরাই নাকি অভিযোগ দিতে বিলম্ব করেছি। বিষয়টি আগামীকাল (বুধবার) উপজেলা স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে লিখিতভাবে জানানো হবে’- বলেন রাকেশ দে।
জানতে চাইলে বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক সারাবাংলাকে বলেন, ‘উনারা প্রথমে জিডি করতে চেয়েছিলেন। আমি বলেছি- এটা তো জিডি হবে না। প্রাথমিক তদন্তপূর্বক মামলা হবে। কিন্তু উনারা জিডিই করবেন বলে বার বার বলতে থাকেন। তখন আমি অভিযোগটি রিসিভ করে প্রাথমিক তদন্তের জন্য রেখে দিতে ডিউটি অফিসারকে নির্দেশ দিই। প্রাথমিক তদন্তের পর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এটা নরমাল প্রসিডিউর। সরকারি অফিসে চুরির ঘটনাকে আমি তুচ্ছ ঘটনা বলব কেন ?’
তারিখ বদলে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে তারিখে মামলা রেকর্ড হয়েছে সেই তারিখই তো দেওয়া হয়েছে। এটাই নিয়ম। এজাহারে উল্লেখ আছে যে, ২২ তারিখ অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর মামলাটি রেকর্ড করা হল।’