হার্ডলাইনে কাদের, সরিয়ে দেওয়া হতে পারে রওশনকে
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:২৭
ঢাকা: জাতীয় পার্টিতে ‘শৃঙ্খলা’ ফিরিয়ে আনতে হার্ডলাইনে যাওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সম্প্রতি পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ডাকায় চটেছেন জাপা চেয়ারম্যান। এ কারণে তাকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরাতে ইতোমধ্যে স্পিকার বরাবর চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু সেই চিঠির কোনো জবাব না পাওয়ায় এবার পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে রওশনকে। এ নিয়ে দলের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে বলে জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কোনো পদে নেই। সেজন্য তাকে বহিষ্কার করতে পারছে না। যদি তিনি দলের সাংগঠনিক পদে থাকতেন তাহলে জাতীয় কাউন্সিল ডাকার কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতো। যদিও সংসদীয় দলের নেতা (বিরোধীদলের নেতা) পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জিএম কাদের সেই চিঠির জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে এবার দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ থেকে রওশন এরশাদকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি, সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধাসহ বেশ কয়েকজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সূত্র জানায়, রওশনপন্থী যেসব এমপি ও নেতাকর্মী রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তুলে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারের তালিকায় দলের কো-চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন এমপি এবং প্রেসিডয়াম সদস্যও রয়েছেন।
সূত্র আরও জানায়, রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ থেকে সরিয়ে দিতে সম্প্রতি দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। ওই সময় নাকি তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘উনাকে আমরা খুবই শ্রদ্ধা করি। মায়ের মতো শ্রদ্ধা করি। উনি আমাকে সেলিম নামে ডাকেন। কারণ আমার নিক নেইম সেলিম। তারপরও দলীয় শৃঙ্খলার স্বার্থে কঠোর হতে হবে। তবে তার আগে তাকে কাউন্সিল ডাকার উদ্যোগ থেকে সরে আসতে বলা হবে। আমার বিশ্বাস উনাকে কেউ কু-পরামর্শ দিয়েছেন।’
এসব বিষয় নিয়ে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির কেউ নন। তিনি পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। এই পদটি আলংকারিক, দলীয় পোস্ট নয়। রওশন এরশাদ সংসদীয় দলের নেতা, অর্থাৎ বিরোধীদলীয় নেতা। সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আমরা স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছি। এখন স্পিকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’
চুন্নু আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কারও দালালি করবে না। দালালি করতে যাবেও না। জাতীয় পার্টি একলা চলার পথ বেছে নিয়েছে। এজন্য দেশের জনগণের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি।’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘পর্টিকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন সংগঠনবিরোধী কর্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম