Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনার জন্মদিনে নির্বাচনে জয়ের প্রত্যয় শপথ আ.লীগের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:৫৯

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের সরকারবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও নৈরাজ্যকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যে সংগঠনের নেতাকর্মীদের অঙ্গীকারাদ্ধ হয়ে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বাংলার শ্রমিক, কর্মচারী, পেশাজীবী, ছাত্র-জনতা, মুক্তিযোদ্ধা সকলেই আছেন। কাজেই আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপি জামায়াতসহ যারা সন্ত্রাস, নৈারজ্য সৃষ্টি করছে, তাদের মোকাবিলা করব। শেখ হাসিনার সাহসের অভাব নাই। আমরা আমরা যদি সুকর্ম করি তাহলেই জনগণ একাট্টা হয়ে তার পেছনে শক্তি হিসাবে দাঁড়াবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতারা এমন অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের জননেত্রী জাতির পিতার কন্যা সারাদেশের এবং বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের আশা ভরসার প্রতীক।’ তিনি শেখ হাসিনার জন্মদিনে শুভ কামনা জানাতে গিয়ে রবি ঠাকুরের গানের কয়েকটি লাইন, ‘এ দিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার? আজি প্রাতে সূর্য ওঠা সফল হল কার? কাহার অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে….তুলে ধরে শুভেচ্ছাসিক্ত করেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী যে অমানিশা, যে ঘোর অমাবশ্যা তার তামাস্য কাটিয়ে এই দেশে সূযোর্দয় ঘটিয়েছেন জাতির পিতার কন্যা। যে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। যার সমস্ত আকাশ মেঘে ঢেকে দিয়েছিল পঁচাত্তরের ঘটনা। তারই কন্যা সেই মেঘকে কাটিয়ে নতুন সুর্যোদয় ঘটিয়েছেন এই দেশে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেত্রীর সুদক্ষ দেশ পরিচালনার কারণে আজকে এটা বাস্তব সত্য। আমি গ্রামের নির্বাচনি এলাকা থেকে নির্বাচন করি। কিন্তু সেখানেও শুক্রবার ফকিরের জন্য যে চাল গৃহস্থ ঘরে রাখা হয় সেই চাল দেওয়ার জন্য সারাদিন লোকই পাওয়া যায় না। আর ঢাকা শহরে কোনো ফকির তো চালই ভিক্ষা নেয় না- এইটাই বাস্তব কথা। টাকা দিলে পাঁচ টাকার নিচে দিতে পারবেন না। দুইটা টাকা দিলে উল্টো ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চলে যায়।’

সাবেক কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এই দিনগুলো দেখার জন্য শুধুমাত্র শেখ হাসিনা ঝড়-বৃষ্টি ও আঁধারের রাতে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন তার স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে। খালি কি উনি স্বজনদের হারিয়েছেন। উনি উনার ছেলে-মেয়ে জয়-পুতুলকে মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করে, তাদের বোর্ডিং হাউজে রেখে এসে তিনি এই দেশের সাধারণ মানুষের সন্তানের পরিচর্যার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কাজেই আজকের দিনে একটাই কথা বলব, বঙ্গবন্ধুর যে অসমাপ্ত কাজ আর আমাদের নেত্রীর যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।’

বিজ্ঞাপন

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতোই বিচক্ষণতার নেত্রী, সাহসী নেত্রী, প্রজ্ঞার নেত্রী শেখ হাসিনা। তার জন্মদিনে দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি দীর্ঘায়ু হোন। আমাদের নেতৃত্ব দেন এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সত্যিকারের সুখী-সমৃদ্ধ শান্তির বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠুক।’

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য শাজাহান খান বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে যারা ২১ বার হত্যাচেষ্টার চেষ্টা করেছেন তারা এখনো সেই পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। বিএনপির নেতারা বার বার বলেন, আবার একটি ১৫ আগস্ট হবে। এরকম একটি কথার পর তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হওয়া উচিত। বঙ্গবন্দুকে যারা হত্যা করেছিল তাদের সেই নায়ক খুনি এবং মীরজাফর জিয়াউর রহমান যে দল প্রতিষ্ঠা করেছিল সেই দলের নেতারা আজ অনেক কথা বলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব বললেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা। আমার প্রশ্ন হলো, যেই মহিলা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জানজুয়ার সঙ্গে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন- সেই মহিলা কোথায় গিয়ে যুদ্ধ করল? যাকে নেওয়ার জন্য বার বার চিঠি পাঠিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু তিনি যান নাই। আবার বলে তারেক জিয়া শিশু মুক্তিযোদ্ধা। উন্মাদের মতো কথা বলে এরা। এই উন্মাদদের খুব শিগগিরই পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠানো উচিত। তা না হলে এই উন্মাদদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা নাই।’

‘ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপনার ইতিহাস আমরা জানি। আপনার বাবা মির্জা রুহুল আমিন চখা মিয়া, যিনি ঠাকুরগাঁও মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার বাবা রাজাকার ছিলেন, আপনিও রাজাকার ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিন মাস পালিয়ে ছিলেন ভারতে আত্মীয়দের বাড়ি। অস্বীকার করতে পারবেন? আপনি কি করে মুক্তিযোদ্ধা হন ‘- সেই প্রশ্নও তোলেন শাজাহান খান।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বাঙালির আশা আকাঙ্ক্ষার একমাত্র ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের মুখপাত্র হয়ে, দূত হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতোই সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। পিতা-মাতা ও স্বজন হারানোর সীমাহীন বেদনার মাঝেও তিনি অসীম সাহস প্রত্যয় নিয়ে লড়াই করেছেন। তিনি বাংলার জনগণের মাঝে খুঁজে নিয়েছেন স্বজনদের। দেশের জন্য সঁপে দিয়েছেন নিজের জীবনের সবটুকু সময়। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য অগ্রযাত্রায়।’

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চায়। আগামীতে নির্বাচন করবে কমিশন। শেখ হাসিনা নির্বাচন করবে না। কেবলমাত্র দৈনন্দিন রুটিন কাজের জন্য শেখ হাসিনা অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই নির্বাচনে আসতে আপনাদের ভয় কি? ওই শক্তিকে আবারও বলব, বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র রাস্তা হলো নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো অন্ধকার গলিপথ দিয়ে কারও ক্ষমতায় আসবার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।’

সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ‘বড় বড় বাঁশ নিয়ে আইবেন কেন? এই বাঁশ দিয়া আওয়ামী লীগের কর্মী, মুক্তিযোদ্ধাদের মোকাবিলা করবেন? এটা কিভাবে ভাবলেন। এই আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধার দল। আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করেছে। রাস্তায় আসেন। কাদের ভাই বলছে, খেলা হবে। খেলা কিন্তু শুরু করি নাই। রাস্তায় যদি নামি খেলা কত প্রকার ও কী কী- দেখাই দিব ইনশাআল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের বন্ধুদেরও পিটাইলেন, এই সাহস পাইলেন কই। সাংবাদিককে মারবেন, পুলিশের ওপর আক্রমণ করবেন আর আমরা বসে থাকমু। কাদের ভাই সময় দিয়েন না। আমরা কিন্তু ধৈর্য রাখতে পারছি না।’ ‘বঙ্গবন্ধু কন্যার শতায়ু কামনা করে মায়া বলেন, ‘বাংলার মানুষের শেখ হাসিনাকে দরকার। তাই তাকে আমাদের আগলে রাখতে হবে। তার আদর্শবান কর্মী হিসেবে থাকতে হবে। আর নিজেদের মধ্যে টুকটাক ভুল বোঝাবুঝি থাকলে মিলে যান। ঐক্যবদ্ধকেভাবে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়লাভ করাতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া সূচনা বক্তব্য দেন- দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সভা পরিচালনা করেন উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আওয়ামী লীগ জন্মদিন শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

সিইসিসহ নতুন ৪ কমিশনারের শপথ
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:১০

আরো

সম্পর্কিত খবর