হারিকেন ইয়ান: ফ্লোরিডায় দুরাবস্থায় ২ হাজার বাংলাদেশি
১ অক্টোবর ২০২২ ১২:১৬ | আপডেট: ১ অক্টোবর ২০২২ ১২:৩৪
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার উপকূলীয় এলাকায় শক্তিশালী হারিকেন ইয়ান’র আঘাতে প্রায় দুই হাজারেও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। গত বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় কায়ো কোস্টা দ্বীপের কাছে ঝড়টি প্রথম আঘাত হানে। এতে ফ্লোরিডার পশ্চিমাঞ্চলের ফোর্ট মায়ার্স, সেন্ট পিটার্সবার্গ, নেপলস, সারাসোটা ও কেপ কোরালসহ প্রায় ১০টি অঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্লোরিডার সভাপতি মোহাম্মদ রহমান জহির বলেন, ফ্লোরিডার পূর্বাঞ্চলে যেসকল বাংলাদেশিরা বসবাস করছেন তাদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। শুধু হাল্কা বৃষ্টি ও বাতাসের ধাক্কা পেয়েছেন। তবে বাড়ি ঘরে পানি ঢোকেনি এমনকি কারও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।
তবে ফ্লোরিডার পশ্চিমাঞ্চলের ফোর্ট মায়ার্স, সেন্ট পিটার্সবার্গ, নেপলস, সারাসোটা ও কেপ কোরাল,বনিতা স্প্রিংস, অ্যাপালাচিকোলা, সিয়েস্তা-কি, পেনসাকোলাসহ প্রায় ১০/১২টি অঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের বাড়ির ছাদ পর্যন্ত পানি উঠেছে। যা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে বলেও জানিয়েছেন মোহাম্মদ রহমান জহির।
ফোর্ট মায়ার্সের একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী জানান, এখানকার বাংলাদেশিরা গ্যাস স্টেশন, কনভিনেন্স স্টোর ও গ্রোসারি ইত্যাদি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গত ৩ দিনের শক্তিশালী হারিকেন ইয়ান’র আঘাতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। বাড়িঘরে ডুবে গেছে। অনেকের বাড়ির ছাদ পর্যন্ত পানি উঠেছে। এ এলাকার বাংলাদেশিসহ লাখ লাখ মানুষ চরম দূরাবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। ফ্লোরিডার নেপলস শহর এখনও ৪ ফুট পানির নিচে। বিদ্যুৎবিহীন বেশ কয়েকটি শহর।
ফুট মায়ার্সে বখতিয়ার রহমান জানান, ১৫০ মাইল বেগে হারিকেন ইয়ান’র আঘাতে ফুট মায়ার্সের অনেক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। অনেক বাড়িঘর ভেঙে গেছে। ক্যাটাগরি ৫-এ ফুট মায়ার্সের বিচের আশপাশের বাড়িঘর ভেঙে গেছে। বাংলাদেশি পরিবারগুলো নিরাপদে আছেন।
ক্রেগ ফিগাট নামের সাবেক ফেমা কর্মকর্তা বলেন, ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট- ফেমা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১৩০০ ফেডারেল রেসপন্স টিম প্রস্তুত রেখেছে। একইসঙ্গে সব ধরনের ইকুইপমেন্ট প্রস্তুত রয়েছে।
সেরাসোটার মেয়র এরিক এরও বলেন, বিদ্যুৎ সহসাই ফিরে আসবে। এজন্য দিনরাত কাজ করছেন জরুরি উদ্ধারকারী টিমের সদস্যরা। অনেক শেল্টার সেন্টার বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তুত আছি, জেনারেটর প্রস্তুত, অনেককেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাউথ-ইস্ট পোট সারলেটকে ধ্বংস করে গেছে ইয়ান। সম্পূর্ণ শহর গোস্ট টাউন।
গভর্নর ডি সানটোস জানান, ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। ৩ মিলিয়ন মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেরাসোটাতে ৯৬ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুত নেই।
ওরলান্ডোর ডিউক এনার্জি জানায়, ৮০ হাজার নাগরিক বিদ্যুৎবিহীন থাকবেন ওরলান্ডো সিটিতে। শহরজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। যদি কেউ বের হন ২ ডিগ্রি চার্জে গ্রেফতার হবেন।
সারাবাংলা/এনএস