সরকারি চাকুরে হয়েও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি!
১ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৪৪
ঢাকা: গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে এক সরকারি চাকরিজীবীকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি পদে পদায়ন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম এস এম রিয়াদ। জানা গেছে, ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে থাকছেন তিনি। তার রুমে আছে টিভি, রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কুলার।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্ধিত কমিটিতে রিয়াদের পদ পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা চিঠিতে তাকে পদায়ন করা হয়। চিঠিতে পদায়নের তারিখ ছিল ৩১ জুলাই ২০২২।
এদিকে, সম্প্রতি এস এম রিয়াদ শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রিয়াদের চাকরিপ্রাপ্তির তারিখ ৫ জুলাই ২০২২। ওই বিজ্ঞপ্তিতে মেধাক্রম অনুসারে প্রদত্ত তালিকায় ৫ম স্থানে থাকা এস এম রিয়াদের রোল নম্বর ২২০৪১৪।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়োগপত্রে উল্লিখিত শর্তাবলী প্রতিপালন সাপেক্ষে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে যোগদানে সম্মত থাকলে নির্বাচিত প্রার্থীদের আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সম্মতিপত্র দাখিল এবং ১ আগস্ট এসএমই ফাউন্ডেশনে যোগ দিতে হবে।
সে অনুযায়ী চাকরিতে যোগও দিয়েছেন এস এম রিয়াদ। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে তাকে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
এদিকে, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবী কেউ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে পারবেন না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা অভিযোগ করেন, সভাপতি আল নাহিয়ান খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে তাকে পদায়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘চাকরিজীবী হওয়ার কারণে এর আগে ছাত্রলীগ থেকে অনেককে অব্যাহতি দিয়েছিলেন জয়-লেখক। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, চাকরি পাওয়ার পরও রিয়াদকে অব্যাহতি না দিয়ে পদোন্নতি দিয়েছেন। যা সংগঠনের সঙ্গে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ।’
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে বহাল তবিয়তে অবস্থান করার অভিযোগও আছে এস এম রিয়াদের বিরুদ্ধে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভর্তি হওয়া এস এম রিয়াদ জহুরুল হক হলের ৩১৩ নম্বর কক্ষে থাকেন। হল সূত্র জানিয়েছে, তার কক্ষে আছে টিভি, রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কুলার। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে এস এম রিয়াদ হাসানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘হল প্রশাসন খোঁজ খবর নিয়েছে। যারা মেয়াদোত্তীর্ণ তাদের হলত্যাগের নোটিশও দিয়েছে। কেউ সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে রাখতে পারবে না। আমি হলে গিয়ে তদন্ত করব। তদন্তে প্রমাণ পেলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন ছাত্রলীগ সরকারি চাকরিজীবী সহ-সভাপতি সহকারী ব্যবস্থাপক