জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার সংবাদ সম্মেলন
২ অক্টোবর ২০২২ ২০:১০
ঢাকা: জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৌসুমী মাহমুদা নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা।
রোববার (২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মৌসুমী টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন। এসময় তিনি অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে মৌসুমী মাহমুদা জানান, ২০২১ সালের ১২ জুন টাঙ্গাইল জেলা প্রেসক্লাবে ভূমিদস্যু ও চাঁদাবাজ-খুনি মোর্শেদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট সন্ত্রাসী মোর্শেদকে দুইটি বিদেশি আগ্নোয়াস্ত্র, দুইটি ম্যাগাজিন ও কয়েক রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। ইয়াবা ব্যবসায়ী রাফসান, বাপ্পি, টুন্ডা রনি, পাঠা রনি, কিশোর গ্যাং দীপ্ত, কটুসহ আরো অনেক কিশোর গ্যাং সদস্যদের অপকর্মের খরচও সে চালায় এবং তাদেরকে দিয়ে বেআইনি কাজ করায়।
তিনি বলেন, মোর্শেদের নামে আমি ২০২০ সালে চাঁদাবাজির মামলা করি (মামলা নং-২৮০/২০)। চার্জশিট দাখিল হওয়ায় মামলার চার্জ গঠনের জন্য গত ২০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল আদালত আদেশ দেয়। এই আদেশের পরই সন্ত্রাসীরা ৫টি মোটর সাইকেলে তাদের পিছু নেয় এবং টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের পাশের পুকুরপাড় রোডে কিশোরগ্যাং সন্ত্রাসী রাফসান, বাপ্পি, কটু, রনি, হৃদয়, দিপ্তসহ অজ্ঞাত আরো ১৪/১৫ জন সন্ত্রাসী তাদের রিক্সা আটকে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, হেমার, লোহার পাইপ ও তরবারি দিয়ে হামলা চালায়। তাদের কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করা হলে পুলিশ ‘ডেংগু রিদয় ও দিপ্ত’ নামের দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। এই দুই আসামি আদালাতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও অজানা কারণে তাদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না।
মৌসুমী মাহমুদা জানান, মোর্শেদসহ সন্ত্রাসীরা আমার জায়গা জোর করে দখল করে নেয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের অত্যাচারে জায়গা বিক্রি করে দিতে চাইলেও কেউ ভয়ে কিনতে চাইছে না।
তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা তার টাঙ্গাইলের বাড়িতে গিয়ে হাতুরি, দা, রড দিয়ে তাকে ও তার মাকে রক্তাক্ত করে। তার মাথায় হাতুরির আঘাতে ছয়টি সেলাই দিতে হয়। তার মাকে কুপিয়ে তার হাতের দুইটি আঙ্গুল কেটে ফেলে। এই ঘটনায় থানায় মামলা গ্রহণ না করায় তিনি আদালতে মামলা করেন (মামলা নম্বর-২২২, ১০/০২/২৯২২ ইং)।
মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে থাকলেও অজানা কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। সন্ত্রাসী মোর্শেদের একাধিক স্ত্রী থাকলেও সে জোরপূর্বক পিংকি নামের এক নারীকে বিয়ে করে ও হত্যা করে। পিংকির লাশটাও পাওয়া যায়নি। পিংকি হত্যার বিচার চেয়ে পিংকির বাবা ২০২১ সালে মোর্শেদসহ ৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি ৭ নম্বর প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হওয়ায় তাকে হত্যা করতে চাইছে।
লিখিত বক্তব্যে এই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও বলেন, একাধিকবার তারা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। যেকোন সময় তারা আমাকে ও আমার মাকে হত্যা করতে পারে।
টাঙ্গাইন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুত তাদের আইনের আওতায় এনে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে মোর্শেদ জেলে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/ইউজে/এনইউ